সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে ১০ বছরের শ্রীতমার চোখ দান করলেন বাবা-মা

সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বুকে চেপে ১০ বছরের শ্রীতমার চোখ দান করলেন বাবা-মা

কলকাতা: সদ্যই মেয়েকে হারিয়েছেন তাঁরা৷ দুরারোগ্য ব্যাধি কেড়ে নিয়েছে তাঁদের একমাত্র সন্তানের প্রাণ৷ তীব্র শোক বুকের মধ্যে চেপে রেখেই  সন্তানের চোখ দান করলেন বাবা-মা।

আরও পড়ুন- হাঁসফাঁস অবস্থা কাটছে না দক্ষিণবঙ্গে, কবে আসবে বর্ষা?

রবিবার হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বছর দশেকের শ্রীতমা মণ্ডলের। সন্তানের অকাল প্রয়াণে একেবারেই ভেঙে পড়েছে তার বাবা-মা। কিন্তু, শত যন্ত্রণার মাঝেও গবেষণার জন্য মেয়ের চোখ দানের সিদ্ধান্ত নেন বাবা নারায়ণ মণ্ডল৷ এর জন্য তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই ব্রেন স্টেম গ্লিওমা রোগে আক্রান্ত ছিল ছোট্ট শ্রীতমা। এই রোগের ছোবলে স্বাভাবিক জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল সে৷  স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলো করার ইচ্ছে থাকলেও তা পেরে উঠত না সে৷ ভিন রাজ্যে মেয়েকে নিয়ে গিয়েও চিকিৎসা করিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা৷ তবে লাভ হয়নি। শেষমেশ রবিবার ভোরে মৃত্যুির কোলে ঢোলে পড়ে শ্রীতমা৷  মেয়ের মৃত্যুর পরেই অঙ্গ দানের জন্য ‘গণদর্পণ’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন পেশায় শিক্ষক নারায়ণ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘অনেক চিকিৎসা করিয়েও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। ওর সব শখ অপূর্ণই রয়ে গেল।  আমরা চাই গবেষণা চলুক। যাতে আর কোনও মা-বাবাকে এ ভাবে তাঁদের কোলের সন্তানকে হারাতে না হয়।’’

গবেষণার জন্য একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে শ্রীতমার কর্নিয়া দান করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান দেবাশিস ভট্টাচার্যের কথায়,  ‘‘এত ছোট বয়সে সাধারণত চোখ দান হয় না। অনেক পরিবারই এটা মেনে নিতে পারে  না। সেই দিক থেকে শ্রীতমার পরিবার অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ ‘গণদর্পণ’-এর পক্ষ থেকে শ্যামল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এর আগে ১৯৯৮ সালে ছ’বছরের এক বালকের দেহ দান করা হয়েছিল। এ বার ১০ বছরের এই বালিকার দেহ দান করা হল।’’