কলকাতা: সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল এক দম্পতির রক্তাক্ত দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ওই দম্পতির নাম অশোক শাহ এবং তার স্ত্রী রেশমি শাহ। সোমবার সন্ধ্যায় ওই দম্পতিকে মৃত অবস্থায় আবিষ্কার করেন তাদেরই মেয়ে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ওই দম্পতিকে খুন করা হয়েছে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অনতিদূরে এমন ঘটনা ঘটে যাওয়ায় প্রথম থেকেই ঘটনার ওপর কড়া নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। প্রসঙ্গত এই মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী তিন দিনের জন্য উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন। জানা যাচ্ছে সেখানে থেকেই তিনি ফোনে পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত অশোক সহ এবং তার স্ত্রী রেশমি ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডের ওই ফ্ল্যাটের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। গুজরাটি এই দম্পতি শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের তিন মেয়ে। দুই মেয়ের আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং এক মেয়ে তাদের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সোমবার সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ তাদের মেয়েই প্রথম বাবা-মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এদিন সন্ধ্যায় মৃত ওই দম্পতির মেয়ে বাড়িতে এসে দেখেন দরজা খোলা, এরপর ফ্ল্যাটে ঢুকতেই তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা-মায়ের মৃতদেহ দেখতে পান। বিষয়টি জানাজানি হতে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভবানীপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা। এমনকি সোমবার রাতেই হরিশ মুখার্জি রোড ফ্ল্যাটে যান পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে স্বামী-স্ত্রী দুজনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এছাড়া ঘর থেকে বেশ কিছু দামী জিনিসপত্র উধাও এবং আলমারিটি লন্ডভন্ড অবস্থায় পাওয়া গেছে। ফলে এই ঘটনাকে প্রথমে ছিনতাই এবং পরে খুনের ঘটনা বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সোমবার রাতে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, ভোঁতা কোনও অস্ত্র দিয়ে ওই দম্পতিকে খুন করা হয়েছে। তাদের শরীরের সেই আঘাতের চিহ্নই রয়েছে। হোমিসাইড শাখা এবং স্থানীয় থানা বিষয়টির তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের পরে বোঝা যাবে কিসের আঘাতের কারণে ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে মঙ্গলবার সকালে মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত মৃত ওই দম্পতির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবেনা বলেই খবর।