কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে অবস্থিত ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডের ফ্ল্যাট থেকে সোমবার রাতে উদ্ধার হয়েছে এক গুজরাটি ব্যবসায়ী দম্পতির রক্তাক্ত মৃতদেহ। আপাতত এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রীতিমতো উদ্বিগ্ন কলকাতাবাসী। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির একেবারে সামনে এই ধরনের জোড়া খুনের ঘটনা ঘটায় তড়িঘড়ি তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশও। আর তার জেরেই সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে মঙ্গলবার রাতে ওই মৃত ব্যবসায়ীর হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধর্মতলা চত্বরে একটি ম্যানহোলের পাশ থেকে উদ্ধার খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি। প্রসঙ্গত অশোক শাহ এবং তার স্ত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের পরেই জানা যায় যে তাদের ব্যবহার করা দুটি মোবাইল ফোনই নিখোঁজ। অন্যদিকে ওই ফোনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ লুকিয়ে আছে আশঙ্কা করে পুলিশ হন্যে হয়ে খোঁজা শুরু করে হারিয়ে যাওয়া ফোনদুটি। তারই একটা মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হয়েছে বলে খবর।
জানা যাচ্ছে এই জোড়া খুনের ঘটনায় মৃত অশোক শাহ এবং তার স্ত্রীয়ের মোবাইল ফোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওই ফোনের মধ্যে অনেক কিছু অজানা তথ্য লুকিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা। ঘটনার আগে এবং পরে ওই ফোনে কোন কোন নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, খুন করার আগে কোনও রকম হুমকি পেয়েছিলেন কিনা মৃত ওই দম্পতি এই সমস্ত কিছুই জানা যাবে যদি মৃতদের ফোনগুলি খতিয়ে দেখা যায়। আর তাই এই জোড়া খুন তদন্তে নেমে পুলিশ খোঁজা শুরু করে অশোক শাহ এবং তার স্ত্রী রেশমি শাহের মোবাইল ফোনদুটি যার একটি মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই ফোনটি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই খুনের কারণ হিসেবে ফোনের মধ্যে কোন ক্লু পাওয়া যায় কিনা তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
অন্য দিকে মঙ্গলবারই তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা দফায় দফায় মৃত অশোক শাহের পরিবারের একাধিক সদস্যদের সাথে কথা বলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে অশোক শাহের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে খবর। তাদের সঙ্গেও খুব শীঘ্রই যোগাযোগ করবেন পুলিশ অফিসাররা। এদিকে ওই দম্পতির সঙ্গে শেষবার ছোট মেয়ের কথা হয়েছিল দুপুর ১ টা নাগাদ। দুপুর আড়াইটার পর থেকে বাবা-মাকে আর ফোনে পাননি মেয়েরা। পুলিশের অনুমান, দুপুর একটা থেকে আড়াইটার মধ্যেই এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা আরো জানতে পেরেছেন দম্পতির ঘর থেকে যে দুটো ফোন খোয়া গিয়েছিল তার মধ্যে একটা ফোন সোমবার রাত পর্যন্ত খোলা ছিল এবং সেটা রিং হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পরেই ওই ফোনের লোকেশন বদলে যায় এবং ফোনের শেষ টাওয়ার লোকেশন ছিল গ্রেট ইস্টার্ন। মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রেট ইস্টার্নের আশেপাশের এলাকা থেকেই অশোক শাহের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়েছে।