আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ মেলেনি, ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ শিক্ষিকা

আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ মেলেনি, ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ শিক্ষিকা

high-court-ssc-case-hearing-commission-faces-question

কলকাতা:  প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়  কলকাতা হাইকোর্টের  নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৬৯ জন। চাকরি হারানো এই সকল প্রার্থীর দাবি, আদালতের নির্দেশে তাঁদের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে৷ কিন্তু, আদালতের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি তাঁদের৷ 

আরও পড়ুন- আচার্য বিলে সই করবেন? প্রথমবার এই বিষয়ে মুখ খুললেন রাজ্যপাল

২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন জয়িতা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ১লা জুন ২০১৭ সালে টেট এর ফল প্রকাশিত হয়। এর পরেই রাইট টু ইনফরমেশন এক্ট (RTI)-এর মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর জানতে চান জয়িতা৷  পর্ষদের পক্ষ থেকে তাঁকে উত্তরপত্র সহ  যাবতীয় তথ্য প্রদান করা হয়। সেখানে তিনি দেখেন , সঠিক উত্তর দেওয়া সত্বেও পর্ষদ তাঁকে ১ নম্বর কম দিয়েছে। সেই ১ নম্বর পাওয়ার জন্য তিনি পর্ষদের কাছে আবেদন জানান। পর্ষদ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।

আদালতে মামলা দায়ের হওয়ার পরেই পর্ষদ জয়িতার আবেদন মঞ্জুর করে এবং তাঁকে ১ নম্বর দিয়ে দেয়। এর পরেই তিনি নিয়োগ পত্র পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হন। ২০১৭ সালের  ৫ই ডিসেম্বর জয়িতাকে নিয়োগপত্র দেয় পর্ষদ৷ 

এই বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবীর গোচরে থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বাতিল মামলায়  বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়নি। তাছাড়া গত ১৩ জুন মামলার শুনানিতেও অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাননি মামলাকারী। শুনানির পর জয়িতা দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় সহ ২৬৯ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এর পরেই জয়িতা সমস্ত তথ্য প্রমাণ নিয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানান৷ তিনি জানান, তাঁর বক্তব্য না শুনেই বিনা বিচারে চাকরি থেকে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

জয়িতার আইনজীবী আশিষ কুমার চৌধুরী জানান, তাঁর মক্কেলের নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর বক্তব্য পেশ করার সুযোগ পাননি। তাঁর উত্তরপত্রের সঠিক মূল্যায়নের পর পর্ষদ তাঁকে ১নম্বর বাড়িয়ে যোগ্য প্রার্থীর মর্যাদা দিয়ে নিয়োগ পত্র দেয়। সেই বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরার সুযোগ না পাওয়ায় বাকি ২৬৮ জনের সঙ্গে তাঁর চাকরিও বাতিল হয়ে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।  ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর টেট পরীক্ষা হয়। ফল প্রকাশিত হয় ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে। ওই বছরই প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বরেও দ্বিতীয় বা অতিরিক্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রায় ২৩ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৪২ হাজার প্রার্থীকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়৷