কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তদন্তের রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই রিপোর্ট তলব করে। এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই তদন্তের অগ্রগতি কতদূর পাশাপাশি কী কী তথ্য আপাতত উঠে এসেছে তা জানতেই রিপোর্ট তলব করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন- ‘দুর্নীতি’-র পাকে SSC! অস্বচ্ছতা রুখতে পরীক্ষা পদ্ধতিতেই বড় বদল আনতে চলেছে কমিশন
কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল এবং সেই মতোই তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তা খারিজ হয়ে গিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন মামলার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এরপরেই সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হল। ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানতে চেয়েছে, যারা চাকরি হারিয়েছেন এবং দ্বিতীয় প্যানেলে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন তারা কী ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন? তাঁদের নম্বর কম আছে? চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা কী করেছিলেন। এদিকে মামলাকারী জয়তি দত্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী আশিষ কুমার চৌধুরী আদালতে প্রশ্ন তুলেছেন, টাকার বিনিময়ে যে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তার তথ্য প্রমাণ ছাড়া কী ভাবে মামলা হয়েছে? তাই এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তাঁর প্রশ্ন রয়েছে। কারণ তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাকারীদের পক্ষ থেকে কোনও তথ্যই আদালতে জমা করতে পারা যায়নি।
পাশাপাশি নিয়ম মেনে তথ্যের অধিকার আইনের মাধ্যমে এই বিষয়ে পর্ষদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বলে জানান হয়েছে। আইনজীবী জানান, তিনি জানতে পারেন ৬ নম্বরের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরও কেন তার মক্কেলকে ১ নম্বর দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতেই পর্ষদ তাঁদের ভুল স্বীকার করে জয়তীর এক নম্বর বাড়িয়ে দেয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বলেন, মামলায় অর্থের বিনিময়ে যে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ সেই প্রসঙ্গে আগে কেউই উল্লেখ করেনি। এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদালতে উত্থাপন করা হল আজ। যদিও পর্ষদের পক্ষ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, পর্ষদ একক ভাবে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছিলেন ২৮ জুন। রাজ্য বলছে, ২৭৩ জনের নিয়োগ তালিকায় ভুল ছিল। এর বাইরে কোনও অনিয়ম হয়নি। ২৭৩ জনের এক নম্বর কম ছিল। তাঁরা আবার ভুল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। এমন জানিয়েছে পর্ষদ। আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।