বাঁকুড়া: শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার! গত দু’বছর করোনার দাপটে সেভাবে বাবার মাথায় ঢালা হয়নি জল৷ এবারে অবশ্য নেই কোনও বিধি নিষেধ৷ তাই সোমবার কাকভোর থেকেই ভক্তদের ঢল নেমেছে বাঁকুড়ার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এক্তেশ্বর মন্দিরে৷ চলছে পূজাপাঠ৷ বসেছে শ্রাবণী মেলা। সেখানেও থিক থিকে ভিড়৷ এবং মাস্ক বা দূরত্ববিধির নেই কোনও বালাই! সবমিলিয়ে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ এদিন একেবারে ভোর রাত থেকে এক্তেশ্বর শিব মন্দিরে ভক্তদের ঢল নেমেছে৷ ব্যস্ততা বেড়েছে পুরোহিতদেরও।
‘হর হর মহাদেব’ ধ্বণীতে মুখরিত মন্দির চত্বর। এদিন পূজো দিতে আসা মমতা দাশগুপ্ত, মীতা চন্দ্ররা বলেন, শ্রাবণ মাসের প্রথম সোমবার বাবার পুজো দিতে এসে সকলের মঙ্গল কামনা করলাম৷ সঙ্গে করোনামুক্ত পৃথিবীর আবেদন তো ছিলই। গত দু’বছর এই সময়ে পুজো দেওয়া সম্ভব হয়নি।’’ তবে এবছর সেই সুযোগ পাওয়ায় খুশী বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।
মন্দির পরিচালন কমিটির সদস্য লালমোহন দেওঘরিয়া বলেন, এদিন ভোর রাত থেকেই পূণ্যার্থীরা আসতে শুরু করেছে। প্রশাসনিক নির্দেশ মেনেই সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবার ‘অন্নকূট’ উৎসবে পঞ্চাশ হাজার মানুষ উপস্থিত থাকবেন। এই প্রাচীন মন্দির ও শ্রাবণী মেলাকে ঘিরে সকলের আলাদা উন্মাদনা থাকে৷ তাই নিরাপত্তার বিষয়টির উপরেও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
প্রাচীন এই এক্তেশ্বর শিব মন্দিরকে ঘিরে নানান জনশ্রুতি রয়েছে। বহুল প্রচারিত জনশ্রুতিটি হল, বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজার সঙ্গে ছাতনার সামন্তভূমের রাজার রাজ্যের সীমানা নিয়ে বিবাদ হয়। সেই বিবাদ চরমে উঠলে তার মীমাংসা করেন স্বয়ং শিবশম্ভূ। দুই রাজার রাজ্যের সীমানার সংযোগস্থলে একতার প্রতীক হিসেবে এই এক্তেশ্বর মন্দির স্থাপিত হয় বলে অনেকেই বিশ্বাস করেন। এদিন একেবারে ভোর রাত থেকে এক্তেশ্বর শিব মন্দিরে ভক্তদের ঢল নেমেছে৷ ব্যস্ততা বেড়েছে পুরোহিতদেরও। তবে যেভাবে করোনার বিধি উড়িয়ে ভক্তদের ঢল নেমেছে, তাতে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷