গত দুই বছরে এই ১০টি দেশকে ছুঁতে পারেনি করোনা !

গত দুই বছরে এই ১০টি দেশকে ছুঁতে পারেনি করোনা !

নিউ ইয়র্ক: করোনা আঘাত হেনেছে গোটা বিশ্বে৷ গত দুই বছরে এই দুনিয়া দেখেছে মৃত্যু মিছিল৷ স্বাভাবিকত্বের সংজ্ঞায় বদল এনে বিশ্ব এখন অভ্যস্ত নিউ নর্ম্যালে৷ শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, পর্যটন, বিনোদন সবকিছুই নতুন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে৷ এত আঘাতের মাঝেও নিজেদের অনন্য করে রেখেছে বিশ্বের বেশ কিছু দেশ৷ যখানে বিষ দাঁত ফোটাতে পারেনি মারণ করোনা ভাইরাস৷ গত দুই বছরে এই দেশগুলিতে একটাও কোভিড রিপোর্ট ধরা পড়েনি৷

প্রশান্ত ও অ্যাটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জগুলিতে ঢুকতে পারেনি করোনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দেশগুলি দ্বীপ হওয়ার জেরেই করোনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে৷  কোভিড সংক্রমণ রুখতে গোড়া থেকেই তারা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে৷ শুরু থেকেই একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল এই দেশগুলিতে৷ কোভিড রুখতে বদ্ধপরিকর ছিল তারা। এই দেশগুলির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, তাদের সীমানায় শুধুমাত্রই নীল জলরাশি৷ চারদিকে সমুদ্র ঘিরে রেখেছে দেশগুলিকে৷ ফলে সংক্রমণ ঠেকাতে বিশেষ অসুবিধা হয়নি। তবে এর মধ্যে দুটি দেশে রয়েছে একনায়কতন্ত্র৷ ফলে ওই দুটি দেশ থেকে সঠিক তথ্য পাওয়াটা মুশকিল৷ তবে সরকারি রিপোর্ট বলছে, সেখানে কোভিড ঢুকতে পারেনি।  

টুভালু: দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত স্বাধীন দ্বীপ রাষ্ট্র টুভালু করোনভাইরাস রুখতে পুরোপুরি সফল৷ কমনওয়েলথের সদস্যভুক্ত টুভালু করোনা সংক্রমণের প্রথম পর্যায় থেকেই আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিছু ক্ষেত্রে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হলেও, ছিল নিয়মের কড়াকড়ি৷  কোয়ারেন্টাইন ছিল বাধ্যতামূলক। তিনটি রিফ দ্বীপ এবং ছয়টি প্রবালপ্রাচীরের সমন্বিত এই দ্বীপের মোট আয়তন ২৫ বর্গ কিলোমিটার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানে সেদেশে প্রায় ৫০ শতাংশ নাগরিকের টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে৷ 

টোকেলাউ: হু-এর কোভিড মুক্ত দেশের তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ক্ষুদ্র প্রবাল দ্বীপ টোকেলাউ৷ মাত্র ১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে অবস্থিত এই দেশ কতগুলি ক্ষুদ্র দ্বীপের সমষ্টি৷ টোকেলাইয়ের জনসংখ্যা মাত্র ১৫০০। এখানে কোনও বিমানবন্দর নেই৷ ফলে আন্তর্জাতিক যাত্রী আগমনও ততটা হয় না। নিউজিল্যান্ডের কাছে অবস্থিত এই দ্বীপে যাতায়াতের মাধ্যম হল জাহাজ৷ 

সেন্ট হেলেনা: দক্ষিণ অ্যাটলান্টিক মহাসাগরের একটি আগ্নেয়গিরি দ্বীপ হল সেন্ট হেলেনা। এটি বিশ্বের অন্যতম প্রত্যন্ত অঞ্চল হিসেবেও বিবেচিত হয়। ১৫০২ সালে পর্তুগিজরা প্রথম এই দ্বীপটিকে আবিষ্কার করেছিল৷ 

পিটকেয়র্ন দ্বীপপুঞ্জ: প্রশান্ত মহাসাগরের চারটি আগ্নেয় দ্বীপের সমষ্টি হল পিটকেয়র্ন দ্বীপপুঞ্জ। সিআইএ ওয়েবসাইটের কান্ট্রি প্রোফাইল অনুযায়ী, এখানকার অধিকাংশ বাসিন্দাই অ্যাডামটাউন গ্রামের কাছে থাকে।

নিউই: প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ নিউই বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল দ্বীপগুলির মধ্যে একটি। নিউজিল্যান্ড থেকে প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই দ্বীপের আয়তন ২৬১ বর্গ কিলোমিটার। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের সমর্থন পেয়েছিল নিউই। 

নাউরু: দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মাইক্রোনেশিয়া অঞ্চলের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র নাউরু৷ আয়তনে এটি বিশ্বের তৃতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ।  কিরিবাতির প্রতিবেশী এই দেশে করোনার প্রথম পর্যায় থেকেই ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়৷ যার জেরেই এখানে কোভিডের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।

 
কিরিবাতি: হাওয়াই থেকে ৩২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কিরিবাতি কোভিড ঠেকাতে প্রথম থেকেই তৎপর৷ গুটিকয়েক বিমান  এখানে ওঠানামা করেছে এই দেশে৷ ফলে এই দেশে ঢুকতে পারেনি করোনা৷ 

মাইক্রোনেশিয়া: ৬০০টিরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত দেশ মাইক্রোনেশিয়া ফেডারেশন। কোভিড পরিস্থিতিতে এই দেশটিকে সমর্থন করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু৷ পাশাপাশি আমেরিকা, চিন এবং জাপানের মতো দেশগুলিও মাইক্রোনেশিয়াকে কোভিড ঠেকাতে সাহায্য করেছিল৷

এই দশটি দেশের পাশাপাশি নিজেদের কোভিড মুক্ত বলে দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া এবং তুর্কমেনিস্তান৷ তবে এই দুই দেশের সরকারি পরিসংখ্যান নিয়ে সংশয় রয়েছে৷  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × three =