কলকাতা: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ‘হাওয়ালা’-র গন্ধ৷ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে রহস্যময় কালো ডায়েরি৷ যেখানে মিলেছে অর্থ লেনদেনের কিছু হিসাব এবং কয়েক জন ব্যক্তির নাম৷ সেই ডায়েরির সূত্র ধরেই ‘মিসিং লিঙ্ক’-এর অনুসন্ধান শুরু করেছেন ইডি-র অফিসাররা৷ আর এই ডায়েরি ধরেই ‘হাওয়ালা’র আশঙ্কা করছে ইডি৷ কিন্তু প্রশ্ন হল এই হাওয়ালা ব্যবস্থা আসলে কী? কী ভাবেই বা কাজ করে?
আরও পড়ুন- অভিষেকের অফিসের সামনে রাতভর অবস্থানে ছিল টেট-উত্তীর্ণরা, সকালে সরাল পুলিশ
সরকারকে ফাঁকি দিয়ে কালো টাকার অবৈধ লেনদেনকেই এককথায় বলা হয় হাওয়ালা৷ আরবিতে এই শব্দের অর্থ কোনও কিছু পাঠানো বা বিশ্বাস। অষ্টম শতাব্দীতে প্রথম শুরু হয় হাওয়ালা’র মাধ্যমে লেনদেন৷ চুরি-ডাকাতির ভয়ে চিন থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত সিল্ক রুটে শুরু হয় হাওয়ালার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন৷ আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া এবং ভারতীয় উপ-মহাদেশে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এটি হল ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে এড়িয়ে টাকা লেনদেনের অবৈধ সমান্তরাল ব্যবসা৷ এই ব্যবসার ভিত্তি হল হাওয়ালা অপারেটরদের পারস্পরিক বিশ্বাস৷ হাওয়ালার মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে অন্যজনের হাতে টাকা পৌঁছয়, কিন্তু তা বয়ে নিয়ে যেতে হয় না। তাহলে কী ভাবে কাজ করে এই সিস্টেম?
ধরা যাক, A এক দেশ থেকে অন্য দেশে B-এর কাছে টাকা পাঠাতে চাইছে৷ কিন্তু কী ভাবে পাঠাবে সে? এর জন্য A নির্দিষ্ট টাকা এবং একটি পাসওয়ার্ড তার কাছের হাওয়ালা অপারেটর X-কে দেবে। একই সঙ্গে ওই পাসওয়ার্ডটি A জানিয়ে দেবে B-কেও। এবার মনে করুন B যে দেশে রয়েছে সেই দেশের হাওয়ালা এজেন্ট M ৷ এবার X সেদেশের এজেন্ট M-কে ওই টাকা B –এর কাছে পৌঁছে দিতে বলবে। জানিয়ে দেবে পাসওয়ার্ডটিও। B সেই পাসওয়ার্ড M-কে জানালেই টাকা পেয়ে যাবে। পরে কোনও সময়ে X ওই টাকা M-কে দিয়ে দেবে। এই লেনদেনের জন্য দু-জনেই একটা কমিশন পাবে। বর্তমানে যে পদ্ধতিতে হাওয়ালা লেনদেন হয় তা অনেকটাই বিস্তৃত ও জটিল। অনেক সময় প্রয়োজনে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকেও ব্যবহার করে থাকেন এজেন্টরা।
নয়ের দশকে হাওয়ালা অপারেটর জৈন ভাইদের ডায়রি থেকে উঠে এসেছিল একাধিক রাজনৈতিক নেতার নাম৷ যা দেশজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল৷ যদিও, এর সাপেক্ষে আদালতে উপযুক্ত প্রমাণ পেশ করতে পারেনি সিবিআই৷ সে কারণে, প্রায় সকলেই ছাড়া পেয়ে যান।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>