কলকাতা: প্রয়াত হয়েছেন সুব্রত মুখার্জি, সাধন পান্ডের মতো শীর্ষস্থানীয় নেতা তথা রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য। অন্যদিকে আবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষা এবং শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই মুহূর্তে ইডির হেফাজতে। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ। ফলে তাঁকেও একপ্রকার বাধ্য হয়েই মন্ত্রিসভা সর্বোপরি দল থেকেই বহিষ্কার করতে বাধ্য হয়েছে শাসক দল। এমতাবস্থায় মন্ত্রিসভার রদবদল ছাড়া আর কোন উপায় নেই, এমনটাই মনে করছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। তাদের সেই সম্ভাবনাকেই সত্যিতে রূপান্তরিত করে সোমবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, বুধবার বিকেলেই মন্ত্রিসভার রদবদল হতে চলেছে। আসতে চলেতে বেশ কিছু নতুন মুখ।
সোমবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক। মমতা ব্যানার্জির পৌরহিত্যে এই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্য মন্ত্রিসভার সব সদস্যদের। গত সপ্তাহেই খবর মিলেছিল আজকের এই বৈঠকেই আগামী মন্ত্রিসভার রদবদল প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই প্রসঙ্গেই সোমবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জানালেন, নতুন করে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করা না হলেও মন্ত্রিসভায় বেশ কিছু পরিবর্তন হবে। এর সঙ্গেই তিনি জানান আগামী বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভায় এই পরিবর্তন হতে চলেছে।
সোমবার সকালে নবান্নে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল সরকার পক্ষ। তাতেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের আগামী বুধবার মন্ত্রিসভায় রদবদল প্রসঙ্গে বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে চার পাঁচ জনকে সরিয়ে দলীয় কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাঁদের পরিবর্তে নতুন কয়েক জনকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন রাজ্যে নতুন আরও সাতটি জেলার নামও ঘোষণা করেছেন। বনগাঁ এবং বাগদাকে নিয়ে ইছামতি জেলা তৈরি হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। এছাড়াও বসিরহাট, সুন্দরবন, নদীয়ার রানাঘাট, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর এবং কান্দি এই জেলাগুলির নামও তিনি ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, মন্ত্রিসভার রদবদল প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুরো মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়ে নতুন করে মন্ত্রিসভা গড়ব এরকম কোন পরিকল্পনা করা হয়নি। তবে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করা হবে, চার পাঁচ জনকে দলের কাজে লাগানো হবে ও তাঁদের পরিবর্তে মন্ত্রিসভায় ৫-৬ জন নতুন মুখ আসবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সুব্রত মুখার্জি, সাধন পান্ডে মারা গিয়েছেন। পার্থ চ্যাটার্জি জেলে রয়েছেন। কাউকে না কাউকেতো এদের দায়িত্বগুলো নিতে হবে। সুব্রতবাবু পঞ্চায়েত এবং জনসাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সামলাতেন। সাধন পান্ডে স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর সামলাতেন পার্থ। এছাড়াও তাঁর হাতে শিল্পসহ বেশ কিছু দপ্তর ছিল।’ এতগুলো দপ্তর তার পক্ষে দেখা সম্ভব নয় বলেই দপ্তরগুলির দায়িত্ব গুলো বন্টন করা হবে বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান। আর সেই কারণেই মন্ত্রিসভায় রদবদল করার এই সিদ্ধান্ত।