থানার আইসির বিরুদ্ধে মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ তুললেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক!

থানার আইসির বিরুদ্ধে মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ তুললেন খোদ তৃণমূল বিধায়ক!

নিজস্ব প্রতিনিধি: পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল বিধায়ক। শুধু সরব হওয়াই নয়, যেভাবে তিনি খোদ থানার আইসি’র বিরুদ্ধে নজিরবিহীন তোপ দেখেছেন তাতে আগামী দিনে বিষয়টি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। আমডাঙা বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান আমডাঙা থানার আইসি অঞ্জন  দত্তের বিরুদ্ধে মাদক কারবারে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ এনেছেন। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ আমডাঙা জুড়ে যে মাদক কারবার রমরমিয়ে চলছে তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছেন থানার আইসি অঞ্জন দত্ত। এলাকার বহু যুবক মাদকের নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছেন, এই প্রসঙ্গ তুলে আইসিকে নিশানা করে তৃণমূল বিধায়ক বলেছেন, ”এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন আমডাঙার আইসি অঞ্জন দত্ত। যে গাঁজা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পিস্তলের বাঁট দিয়ে মারধর করার অভিযোগ, তার কাকাকে তিন চার দিন আগে আইসি ধরে রাত্তির বারোটার সময় রফা করে ছেড়ে দেয়। আমি তো সেদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে মেসেজ করেছিলাম, গাঁজার ব্যবসায়ীকে সন্ধ্যাবেলায় ধরে মধ্যরাতে ছেড়ে দেয় আপনার পুলিশ! এক্ষুনি আইসি অঞ্জন দত্তের অপসারণ চাই।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “ড্রাগ ডিলারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে আমডাঙার আইসি অঞ্জন দত্তের। ওই আইসি ড্রাগের স্টকিস্টে পরিণত হয়েছেন। তাঁকে না সরালে আমডাঙায় শান্তি ফিরবে না।”

 

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যে মারাত্মক অভিযোগ শাসকদলের একজন বিধায়ক করেছেন, তা নিয়ে কি এবার যথাযথ তদন্ত শুরু হবে? রাজ্য জুড়ে একশ্রেণির পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই নানা অভিযোগ ওঠে। তবে সেই অভিযোগের কতটা তদন্ত হয় তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাই আইসি অঞ্জন দত্তের বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগ তৃণমূল বিধায়ক করেছেন তার অবিলম্বে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন আমডাঙার মানুষ। উল্লেখ্য বিধায়ক হিসেবে রফিকুর সবসময় মানুষের পাশে থাকেন, এমন কথা এলাকায় শোনা যায়। কিন্তু এলাকায় কান পাতলে তৃণমূলের তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও সামনে আসে। মনে রাখতে হবে গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রথমে রফিকুর রহমানের নাম ঘোষণা করেনি দল। তখন বিষয়টি নিয়ে রাস্তায় নামেন স্থানীয় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বহু জায়গায় পথ অবরোধ করা হয়েছিল। পরে পরিস্থিতির চাপে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন। নতুন করে প্রার্থী করা হয় রফিকুরকে। আর একুশের নির্বাচনে যথারীতি জিতে আমডাঙা থেকে টানা তিনবার বিধায়ক হন রফিকুর। আর প্রথমে যখন টিকিট পাননি তখন রফিকুর প্রকাশ্যে তৃণমূলের তৎকালীন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছিলেন।

 

এই পরিস্থিতিতে আমডাঙার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, থানার বর্তমান আইসি অঞ্জন দত্ত বিধায়ক রফিকুরের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজনের কথাতেই নাকি চলেন। তবে এ ব্যাপারে পুলিশের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু রফিকুর যেভাবে পুলিশের বড় কর্তাকে এসএমএস করে থানার আইসি অঞ্জন দত্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর কথা বলেছেন, তাতে কতটা নড়েচড়ে বসেছে জেলার পুলিশ মহল সে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় মানুষ অবিলম্বে অভিযোগের সঠিক তদন্ত চাইছেন। এ সম্পর্কে বিধায়কের অনুগামীদের বক্তব্য, রফিকুর রহমান সব সময় সোজাসাপ্টা কথা বলতে অভ্যস্ত। অন্যায় দেখলেই তিনি তার প্রতিবাদ করেন। তাই আমডাঙা থানার আইসির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন রফিকুর, তার যথাযথ তদন্ত চেয়ে সোচ্চার হয়েছেন তাঁরা সকলেই।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 5 =