‘বাপ গরু চোর, মেয়ে কী বলবে?’, হাইকোর্টে বিদ্রোহের মুখে অনুব্রত-কন্যা

‘বাপ গরু চোর, মেয়ে কী বলবে?’, হাইকোর্টে বিদ্রোহের মুখে অনুব্রত-কন্যা

d389fb61c1250db0bcb6a2aba741c1ca

কলকাতা:  আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষক পদে বেআইনি নিয়োগ মামলায় হাজিরা দিতে পৌঁছন অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল৷ সামনের গেট দিয়ে না ঢুকে, পিছনের গেট দিয়ে কোর্ট চত্বরে প্রবেশ করেন তিনি৷ সেখানেই তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা৷ যদিও, সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি তিনি৷ সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেলেও আদালত চত্বরে বিদ্রোহের মুখে পড়তে হয় তাঁকে৷ চোরের মেয়ে বলে তাঁকে কটাক্ষ করেন আইনের কাজে আসা আরতি মিত্র নামে এক মহিলা৷

আরও পড়ুন- প্রচুর জমি কেনা হত কম দামে! গরু পাচারকাণ্ডে বড় তথ্য পেল সিবিআই

সাংবাদিকদের প্রশ্নে নিশ্চুপ অঙ্কিতার উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘কিছু বলতে পারবে না, বলার মতো মুখ নেই৷ কোটি কোটি টাকা নিয়েছে৷’’ ব্যঙ্গের সুরেই তিনি বলেন, ‘‘মুখটা দেখান ফটো তুলব৷ বাপ গরু চোর৷ তাঁর মেয়ে৷ বাপের কুকীর্তি কি আপনারা জানেন না? অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন৷ ছিলেন মাছের ব্যবসায়ী, সেখান থেকে আজ কোটি কোটি টাকা রোজগার৷ গরিব মানুষের টাকা মেরেছে৷ সব টাকার হিসাব দিতে পারবে তো?’’  

তাঁর পরিবারের কেউ কি টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন? জবাবে বিদ্রোহী আরতি বলেন, ‘‘আমার পরিবারের কেউ টেট দেয়নি৷ আর কোন ভারসাতেই বা তাঁদের তৈরি করব? বছরের পর বছর রাস্তায় পড়ে থাকার জন্য? কেউ প্রতিবাদ করবে না৷ কেউ ন্যয় বিচার করিয়ে দেবে না৷’’ তিনি মনে করেন অনুব্রত-কন্যার শাস্তি হওয়া উচিত৷ শুধু তাই নয়, এভাবে সুরক্ষা বলয়ে ঘিরে তাঁকে আদালতে নিয়ে আসার কোনও মানে হয় না বলেও দাবি তাঁর৷ আরতির কথায়, ‘‘আমরা ন্যয় চাই৷ আদালত আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি৷ ওঁর মেয়ের নামে কোটি কোটি টাকা ধরা পড়ছে৷ সাধারণের টাকা নয়ছয় করেছে৷ ’’ তিনি জানান, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর কাছে ভগবান৷ আরতির কথায়, ওঁর মতো মানুষ হয় না৷ 

গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল৷ তাঁর অ্যাকাউন্টে বিপুল সম্পত্তি না মিললেও, তাঁর মেয়ে সুকন্যার নামে প্রচুর সম্মত্তির হদিশ পেয়েছে সিবিআই৷ এরই মধ্যে জানা গিয়েছে সুকন্যা নাকি প্রাথমিক স্কুলের দিদিমণি৷ কিন্তু অভিযোগ, টেট পরীক্ষা না দিয়েই এই চাকরি পেয়েছেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, চাকরি পাওয়ার পর এক দিনের জন্যেও স্কুলে আসেননি৷ উল্টে হাজিরার রেজিস্টার যেত তাঁর বাড়িতে৷ বাড়িতে বসেই বেতন নিতেন কেষ্ট-কন্যা৷ পাশাপাশি অভিযোগ, সুকন্যা ছাড়াও বেআইনি ভাবে স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন অনুব্রতর আরও তিন আত্মীয় এবং দুই ঘনিষ্ঠ৷  বুধবার এই বিষয়ে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম৷ অভিযোগ শোনার পরই বৃহস্পতিবার দুপুরে সুকন্যা সহ বাকি অভিযুক্তদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷