ইউক্রেনে রুশ সেনা মোতায়েন ‘সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন’, আটকে থাকা পড়ুয়াদের নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে উদ্বেগ ভারতের

ইউক্রেনে রুশ সেনা মোতায়েন ‘সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন’, আটকে থাকা পড়ুয়াদের নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে উদ্বেগ ভারতের

রাষ্ট্রসংঘ: যুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন৷ যে কোনও সময় যুদ্ধ শুরু হতে পারে৷ বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে পূর্ব ইউরোপ৷ এই অবস্থায় রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা দুই প্রদেশ ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় দেশকে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাল ভরত৷ 

আরও পড়ুন- ৩ ডোজ নিয়েও কোভিড পজিটিভ কুইন এলিজাবেথ! সুস্থতা কামনায় মোদী

রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে ইউক্রেনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়৷ ওই বৈঠকে মস্কো এবং কিয়েভকে আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধামসূত্র বার করার বার্তা দেয় নয়াদিল্লি৷ দুই পক্ষকেই সংযত থাকার আহ্বানও জানায় ভারত৷ রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি৷ তাঁর বার্তা, একমাত্র কূটনীতির মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব৷ এদিকে এই মুহূর্তে ইউক্রেনে আটকে রয়েছে প্রায় ২০ হাজার পড়ুয়া৷ তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি।

এদিন তিরুমূর্তি বলেন, “ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন ভারতের কাছে সবচেয়ে জরুরি কাজ।” আজই ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেখে ফেরাতে কিয়েভের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বি-৭৮৭ বিমান।  সূত্রের খবর, সেখান থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে আজ রাতেই দিল্লি ফিরবে বিমানটি৷ 

ইউক্রেন ও রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে নয়াদিল্লি৷ কারণ সোভিয়েত জমানা থেকেই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা অস্ত্রের বড় খরিদ্দার ভারত৷ রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত৷ তাই আমেরিকা সুর চড়ালেও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অবস্থান নিয়ে মুখে কুলুপ ভারতের৷ অন্যদিক থেকে দেখতে গেলে অস্ত্র আমদানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে ভারতের৷ 

 সোমবার রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ ফলে ক্রিমিয়ার ফের বিভক্ত হল ইউক্রেন। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। 

এদিকে ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন ঘোষণা করার পরেই রাশিয়ার তরফে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলিতে ‘শান্তিরক্ষা বাহিনী’ মোতায়েন করার ঘোষণা করা হয়েছে। এই আবহে রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, রাশিয়া পূর্ব ইউক্রেনকে স্বাধীন সত্তা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।