এল না ফিটন গাড়ি, নেই কেক-পুষ্পস্তবক, জেলে নিঃসঙ্গ জন্মদিন কাটালেন পার্থ

এল না ফিটন গাড়ি, নেই কেক-পুষ্পস্তবক, জেলে নিঃসঙ্গ জন্মদিন কাটালেন পার্থ

কলকাতা: আজ তাঁর জন্মদিন৷ ফি বছর আজকের দিনে নাকতলার বাড়িতে দলে দলে ভিড় জমাতেন কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীরা। গত বছর মায়ের মৃত্যুর কারণে তিনি নিজেই বাড়িতে জন্মদিনের আয়োজন করতে বারণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরেও শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ বেহালার পার্টি অফিসেও ধুমধাম করে তাঁর জন্মদিনের আয়োজন করা হয়েছিল৷ কর্মী-সমর্থকদের উদ্যোগে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেছিলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে পাশে ছিলেন ‘বিশেষ বান্ধবী’ অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ও। তবে এ বছরের জন্মদিনটা সম্পূর্ণ আলাদা৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে আপাতত জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তাই প্রেসিডেন্সি জেলে নিজের সেলে বসেই বৃহস্পতিবার নিঃসঙ্গ জন্মদিন কাটালেন পার্থ।

আরও পড়ন- প্রতিমার কাঠামোতে আটকে পচাগলা দেহ! বাবুঘাটে চাঞ্চল্য

এবছর তাঁর পুজোও কেটেছে গারদের ভিতরে৷ সংশোধনাগারের পুজোয় অংশ নিতে চেয়েছিলেন পার্থ৷ কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেয়নি৷ ষষ্ঠীতে মিনিট দশেকের জন্য তাঁর ওয়ার্ডের ঠিক পিছনেই দুর্গা পুজো দেখতে গিয়েছিলেন। কয়েক জন বন্দির অনুরোধে ঢাকও বাজান৷ তার পর ফিরে আসেন ওয়ার্ডে৷ এবার একাকীত্বে কাটল জন্মদিন৷ 

গত ২২ জুলাই রাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। প্রথম থেকে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দর্শিয়ে জামিনের আবেদন জানিয়ে আসছেন পার্থ৷ একেক বার কান্নাকাটিও করেছেন৷ কিন্তু কোনও যুক্তিতেই জামিন মঞ্জুর হয়নি৷ বুধবার আলিপুর কোর্টের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজেএম) আদালতে শেষ শুনানিতে জামিনের আবেদনই করলেন না প্রাক্তন মন্ত্রী। জন্মদিন কাটল জেলের চার দেওয়ালেই৷ 

নথি অনুযায়ী, ১৯৫২ সালের ৬ অক্টোবর জন্ম পার্থর। ৭০ পূর্ণ করে ৭১ বছরে পা দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী৷ মা শিবানী চট্টোপাধ্যায় ও স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের জীবিত থাকাকালীন তাঁর জন্মদিনে বাড়িতে পায়েস ছিল মাস্ট। ধান-দূর্বা দিয়ে ছেলের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করতেন মা৷ কিন্তু, ২০১৭ সালে স্ত্রী ও ২০২১ সালে মায়ের মৃত্যুর পর আর বাড়ির জন্মদিন পালন করতেন না পার্থ৷ বরং বেহালা পশ্চিমের ম্যান্টনের অফিসেই ভিড় জমাতেন কর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা৷ আর কখনও যদি শারদোৎসবের মধ্যে জন্মদিন পড়ত,  তাহলে জন্মদিন পালনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতেন নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তারা৷ নতুন পাঞ্জাবি-পাজামা পরে পুজোর মঞ্চে এসে জন্মদিন পালন করতেন পার্থ৷ কখনও তাঁর জন্য আসত ফিটন গাড়ি। কাটা হত কেক। সেই দিন বাইরে কোথাও গেলে গাড়ি বোঝাই হয়ে যেত মিষ্টি, কেক আর পুষ্পস্তবকে। আজ কোনও কেক নেই, পুষ্পস্তবকও নেই৷ রয়েছে একরাশ একাকীত্ব৷