কোচবিহার: রাখে হরি মারে কে! পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মৃত্যু হয়েছিল মায়ের৷ মৃত মায়ের জঠর থেকেই জীবন পেল ফুটফুটে সন্তান৷ মায়ের মৃত্যুর প্রায় ২ মিনিটের মধ্যে সিজার করে বার করে আনা হল শিশুটিকে৷ তার জীবন রক্ষা করলেন কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটি সুস্থ আছে।
আরও পড়ুন- ভরি ভরি সোনার গয়নায় সাজেন মা কালী, এবার কেমন হবে কেষ্টর কালীপুজো?
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টায় নাগাদ তুফানগঞ্জের বলরামপুর থেকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয় শারিফা খাতুনকে। সেই সময় প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন বছর চব্বিশের শারিফা৷ তাঁকে দ্রুত ভর্তি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়। কিন্তু, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় পরিস্থিতি জটিল হতে থাকে। ক্রমে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। শারিফার সিজার করার প্রস্তুতির মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর৷
সঙ্গে সঙ্গে ডপলার এবং স্টেথোস্কোপের মাধ্যমে পীরক্ষা করে চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন শারিফার গর্ভের সন্তান তখনও বেঁচে আছে। অক্সিজেনের অভাবে যেন তার মৃত্যু না হয়৷ শুরু হয় চিকিৎসকদের লড়াই৷ তড়িঘড়ি অপারেশন শুরু করেন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা। মৃত মায়ের গর্ভ থেকে সন্তানকে বাঁচিয়ে আনেন তাঁরা। সিজারের পরেই সদ্যোজাত সন্তানটিকে এসএনসিউ-তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কোচবিহার মেডিকেল কলেজের এমএসভিপি রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘‘সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটে ওই অন্তসত্ত্বা মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দ্রুত তাঁর সিজারের বন্দোবস্ত করা হচ্ছিল৷ কিন্তু প্রস্তুতির মাঝেই ১০টা ৮ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকেরা দেখেন মায়ের মৃত্যু হলেও সন্তানটি তখনও জীবিত৷ মিনিট দুয়েকের মধ্যে গর্ভস্থ শিশুটিকে বের করা না গেলে অক্সিজেনের অভাবে তার মৃত্যু হবে। অবিলম্বে চিকিৎসক অমিতাভ পাল, চিকিৎসক যোগেশ বর্মা, চিকিৎসক মেহেদি হাসান এবং নার্সরা সিজার করে বাচ্চাটির প্রাণ রক্ষা করেন৷’’ জন্মের সময় শিশুটির ওজন ছিল ২ কেজি ১০০ গ্রাম। এখনও এসএনসিউতেই ভর্তি রাখা হয়েছে তাকে৷
এদিকে, শরিফার মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবারে৷ তারই মধ্যে সান্তনা শরিফার ফুটফুটে সন্তান৷ তাকে আকড়েই বাঁচার লড়াই তাঁদের৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>