ঢাকা: মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা! বাংলা ভাষার প্রতি বাঙালির প্রেম, ভালোবাসা, আবেগ অবর্ণনীয়। বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায়ে ঝরেছে কত রক্ত। কত সংগ্রাম, আত্মবলিদান, কত প্রাণের বিনিময়ে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায় করেছিল বাংলাদেশের মানুষ। এর পর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷ বাংলা বর্ণমালাকে ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে অবদান সেই বাংলাদেশেরই৷
আরও পড়ুন- আতঙ্কের নাম শুভেন্দু! অভিষেক গড় থেকে হুঙ্কার বিরোধী দলনেতার
১৯৯৭-৯৮ সালে রাষ্ট্রসংঘের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসাবে একুশে ফেব্রুয়ারির স্বীকৃতি আদায় করেছিল বাংলাদেশ৷ এবার রাষ্ট্রসংঘের অন্যতম দফতরের ভাষা হিসাবে বাংলার মর্যাদা আদায়ে ব্রতী ওপাড় বাংলা৷ শুক্রবার কলকাতা কলেজ স্কোয়ারে বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করার পর একথা জানান সেদেশের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মণি৷ এদিন তিনি বলেন, ‘‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ করে সমস্যার সমাধান হয়নি৷ একটি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও সবশেষে ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম৷ ১৯৭১ সালে সেই দুর্দিনে একমাত্র বন্ধু ছিল ভারত৷ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল৷ তাই কলকাতাকে আমাদের কখনই ‘বিদেশ’ বলে মনে হয়নি৷’’
দীপু মণি আরও বলেন, ‘‘কলকাতার যে জায়গায় বাংলাদেশ বইমেলা হচ্ছে, তা আমাদের পূর্ব পুরুষদের স্মৃতি বিজরিত৷ সেই কলেজ স্কোয়ার, কলেজ স্ট্রিট, কফি হাউস, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজ, হেয়ার স্কুল আর বই পড়া৷’’ প্রসঙ্গত, এই বাংলাদেশ বইমেলা চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত৷ প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত৷ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷
বাংলা হল আন্দোলনের ভাষা৷ যা আজও শিহরণ জাগায়৷ ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে বাংলা ভাষাকে পূর্ববঙ্গের সরকারি ও শিক্ষার ভাষা এবং উর্দুর পাশাপাশি পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন৷ এর পর পদ্মা দিয়ে বহু জয় গড়িয়েছি। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণীত হলে ২১৪ নং অনুচ্ছেদে বাংলা ও উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উল্লিখ করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা প্রবর্তিত হয়।
বাংলা নিয়ে বরাবরই সংবেদনশীল বাংলাদেশ৷ আজ বাংলা বর্ণমালার ডিজিটাল রূপও বাংলাদেশের অবদান৷ বাংলা ইউনিকোড অভ্র তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশরই তরুণের হাত ধরে৷ উইন্ডোজে ইউনিকোড ভিত্তিক বাংলা লেখার জন্য ২০০৩ সালের ২৬শে মার্চ অভ্র কীবোর্ড সফটওয়্যারটির সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে৷ এর সাহায্যে বাংলা লিপি ব্যবহার করে ভাষাতে টাইপ করা যায়। এটি তৈরি করেছিলেন মেহদী হাসান খান নামে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র৷ ২০০৩ সালে অভ্র কীবোর্ড তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। এটি প্রথমে ভিজুয়াল বেসিক প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল৷ পরে তা ডেলফিতে ভাষান্তর করেন। পরবর্তীতে এই সফটওয়্যারের উন্নয়নের সাথে যুক্ত হন রিফাত-উন-নবী, তানবিন ইসলাম সিয়াম, রাইয়ান কামাল, শাবাব মুস্তফা, ওমর ওসমান, সারিম খান এবং নিপুন হক।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>