কলকাতা: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই। সেই মামলায় বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। দুর্নীতির অভিযোগের মাঝেই তাঁর বিরুদ্ধে ফের বড় অভিযোগ উঠল। অন্য এক বিচারপতি তাঁর সম্পর্কে দাবি করেছেন যে, তিনি অবিচার করেছেন।
আরও পড়ুন-ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা, কোভিড নিয়ে নবান্ন থেকে কড়া নির্দেশ মমতার
কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় অবিচার করে যোগ্য এবং মেধা তালিকায় প্রথমে থাকা চাকরিপ্রার্থীকে বঞ্চিত করেছেন। অবিলম্বে রাজ্য সরকার নতুন শূন্যপদ তৈরি করে এই চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগপত্র তুলে দেবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়। মেধাতালিকায় প্রথম হয়েও মেলেনি চাকরি এবং যারা ওয়েটিং লিস্টে ছিল তাঁরা গত তিন বছর ধরে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন শুধুমাত্র কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের গাফিলতির কারণে। এমনটাই অভিযোগ ছিল মামলাকারীর। সেই প্রেক্ষিতেই এদিন এমন নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। জানা গিয়েছে, তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায় নামের এক চাকরিপ্রার্থী ২০১৬ সালের নবম দশমের এসএলএসটি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম স্থান ছিল। দুটি মাধ্যম ছিল একটি ইংরেজি, আরেকটি বাংলা। কিন্তু তথাগত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অঙ্কের শিক্ষকের জন্যই নথিভূক্ত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাকে সুপারিশ পত্র দেয় রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং উত্তর দিনাজপুরের সিট গ্রাম বিদ্যাভবন (উচ্চমাধ্যমিক) স্কুলে নিয়োগের জন্য বলা হয়। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ পত্র তুলে দেন তথাগতর হাতে।
কিন্তু তথাগত সংশ্লিষ্ট স্কুলে যোগদান করতে গিয়ে দেখেন সেখানে বাংলা মাধ্যমে পঠন পাঠন হয়। তাই সেখানে শূন্য পদ নেই। নিরুপায় তথাগত এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দারস্ত হয়ে পুরো বিষয়টি জানান। তারপরও উভয় পক্ষ কোনও রকম পদক্ষেপ না নেওয়ায় অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। বুধবার মামলার শুনানিতে তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, তাঁর মক্কেল একজন বৈধ তালিকাভুক্ত যিনি ২০১৯ সাল থেকে যোগ্য প্রার্থী হয়েও এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের গাফিলতির কারণে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আছেন। এদিন বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় চূড়ান্ত নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেন, এটি সঠিক বিষয় নয়, প্রার্থীর প্রতি অবিচার করা হয়েছে। রাজ্য সরকারকে তিনি অবিলম্বে নির্দেশ দিচ্ছেন, দু’সপ্তাহের মধ্যে শূন্যপদ তৈরি করতে হবে এবং এসএসসিকে আরও দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগপত্র তুলে দিতে হবে।