বড্ড ভারী! এবার ১০ দিন ব্যাগ ছাড়াই স্কুলে আসবে পড়ুয়ারা

বড্ড ভারী! এবার ১০ দিন ব্যাগ ছাড়াই স্কুলে আসবে পড়ুয়ারা

কলকাতা: ব্যাগের ভারে ন্যূব্জ কাঁধ! এর থেকে কি নিস্তার নেই? আছে বইকি৷ ১০ দিনের জন্য স্কুল পড়ুয়াদের বইয়ের ভার কমাতে উদ্যোগী হল CISCE বোর্ড। শুক্রবার রাতে বোর্ডের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, মাসে ১০ দিন বা ৬০ ঘণ্টা ব্যাগ ছাড়াই স্কুলে আসবে পড়ুয়ারা। আপাতত ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই নীতি কার্যকর করতে চাইছে বোর্ড ।

আরও পড়ুন- উচ্চ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট-রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার দিন বদল, যা জানাল সংসদ

CISCE-র নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের প্রকৃত বিকাশের অর্থ স্কুলে শুধুই বই-খাতা-ব্যাগের বোঝা নিয়ে আসা নয়। পড়ুয়ারা মাসের অন্তত দশটা দিন নিজের মতো করো কাটাতে পারবে। ওই ১০ দিন পড়ুয়াদের ফিল্ড ট্রিপ, প্রকৃত অন্বেষণ, শিক্ষামূলক ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। তেমনটা না হলে অন্তত স্কুলের মধ্যেও নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আলাপ-আলোচনা, কুইজ কিংবা সাংস্কৃতিক বিষয় যুক্ত করা হতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাগান করা, মাটির জিনিস তৈরি করা, বৈদ্যুতিন মডেল তৈরি করা বা ছবি আঁকার মাধ্যমে কী ভাবে পড়ুয়ারা জ্ঞানের পরিধির বিস্তার ঘটাবে, সে বিষয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগী হতে হবে৷

বহুদিন ধরেই স্কুল ব্যাগের বোঝা কমানো নিয়ে শিক্ষামহলে আলোচনা চলছে। বইয়ের ব্যাগের ভার বইতে বইতে স্কুল পড়ুয়াদের নানা শারীরিক সমস্যার কথাও বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে। সেই সমস্যার কথা মনে রেখেই জাতীয় শিক্ষানীতিতে ‘ব্যাগলেস ডে’ পালনের কথা বলা হয়েছে। CBSE বোর্ড আগেই মাসের বেশ কয়েকটা দিন ব্যাগ ছাড়া পড়ুয়াদের ক্লাসে আসার বন্দোবস্ত করেছে। সেই পথেই পা বাড়তে চলেছে CISCE বোর্ড৷ বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, পড়াশোনার বাইরেও একটা বিশাল জগৎ রয়েছে৷ সেই জগত যেন মাসের এই কটা দিন পড়ুয়াদের সামনে ফুটে ওঠে৷ 

মুখস্থবিদ্যা নয়, হাতেকলমে শিক্ষা এবং ব্যবহারিক জ্ঞানকে আরও বেশি প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে নয়া জাতীয় শিক্ষা নীতিতে। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে কলকাতার অধিকাংশ স্কুলের অধ্যক্ষরা। মর্ডান হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। ব্যাগ ছাড়া স্কুলের দিনগুলিতে শিক্ষকরা কী ভাবে পড়াবেন, তার একটা রূপরেখা তৈরি করতে হবে। আশা করা যায়, এই ধরনের শিক্ষণ পদ্ধতি পড়ুয়াদের পক্ষে খুবই আনন্দের এবং উপকারী হবে।’’ ন্যাশনাল ইংলিশ হাইস্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহাও একই মত পোষন করেছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘এখন তো গুগল থেকেই সব কিছু জানতে পারা যায়। মুখস্থ করার দরকারও পড়ে না। তবে পড়ুয়াদের ব্যবহারিক জ্ঞান আরও বাড়ানো দরকার। সেই কাজে ব্যাগ ছাড়া স্কুলের দিনগুলি খুবই উপকারী হবে।’’