কলকাতা: পড়ুয়াই যদি না থাকে, তাহলে শিক্ষক পুষেও লাভ নেই৷ পড়ুয়াহীন স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হোক। দিল্লি যদি মডেল স্কুল করে দেখাতে পারে, তাহলে পশ্চিমবঙ্গ কেন নয়? প্রয়োজনে ফান্ড জোগাড় করতে হবে। স্কুলে শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। শুক্রবার রাজ্যের শিক্ষা দফতরের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, ‘‘পড়ুয়া অত্যন্ত কম থাকলে স্কুলের অনুমোদন প্রত্যাহার করে নিন। অযথা শিক্ষক পুষে কোনও লাভ নেই। যেখানে ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে, বরং সেখানে শিক্ষকদের পাঠান।’’
আরও পড়ুন- বসল ৫৬ লক্ষের ক্যামেরা সেন্সর, আরও কড়া নিরাপত্তায় মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়ি
শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত একটি মামলায় এদিন আদালতেক সামনে হাওড়ার একটি স্কুলের উদাহরণ তুলে ধরা হয়। যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র ১৩ জন৷ স্কুলে রয়েছেন পাঁচ জন শিক্ষক৷ আবার ওই জেলারই রাসপুর গার্লস হাই স্কুলে ছাত্রী সংখ্যা ৫৫০ জন৷ অথচ তাঁদের পড়ানোর জন্য আছেন মাত্র আট জন শিক্ষক৷ শুধু তাই নয়, ওই স্কুলে ইতিহাস, অঙ্ক-সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষকের অভাবও রয়েছে। ছাত্র এবং শিক্ষকের এমন অনুপাত দেখে অসন্তুষ্ট বিচারপতি বসু। পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তিনি পড়ুয়াহীন স্কুলের অনুমোদন তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
বিচারপতির এই পরামর্শ শোনার পর শিক্ষা দফতরের আইনজীবী বলেন, এই পদক্ষেপ করা হলে সমস্যা তৈরি হতে পারে। রাজনৈতিক চাপ আসতে পারে। একথা শোনার পর বিচারপতি বসু পাল্টা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক চাপের কথা ভুলে যান। স্কুলের এই অবস্থা চলতে পারে না। স্কুলের হাল ফেরাতেই হবে। আমরা কেন মডেল স্কুলের আশা করতে পারি না? মেয়েদের একটি স্কুলে শিক্ষক, শৌচালয়, নিরাপত্তা কর্মী নেই। এর পরও চুপ করে থাকতে হবে?’’
বিচারপতি বসু আরও বলেন, ‘‘শিক্ষক বদলির যে নতুন নিয়ম চালু হয়েছে, তা যথাযথ ভাবে পালন করুন। বদলির নিয়ম না মানলে পরের মাস থেকে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষকদের বদলে পড়ুয়াদের কথা ভাবতে হবে। এই অচলায়তন ভাঙতে গেলে সময় লাগবে। কিন্তু আমরা করে ছাড়ব।’’
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>