কায়রো: একদিকে যেমন পাইলটের উপস্থিত বুদ্ধি এবং কারিগরি দক্ষতায় বহুবার সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন একাধিক যাত্রী, অবধারিত দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বহু বিমান ঠিক একইভাবে পাইলটের গাফিলতিতেও কিন্তু হারাতে হয়েছে বহু যাত্রীর প্রাণ। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে এমনই এক বিমান দুর্ঘটনার তদন্তের চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। যেখানে দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র পাইলটের গাফিলতিতে ২০১৬ সালে ৬৬ জন আরোহীকে নিয়ে ভেঙে পড়ে একটি যাত্রীবাহী বিমান। ওই রিপোর্টে জানা গিয়েছে, চলন্ত বিমানের মধ্যেই ককপিটে বসে হঠাৎই ধূমপান করতে শুরু করেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই বিমানের চালক। আর তাতেই এই বিপত্তি। তাঁর সিগারেট ধরানোর আগে আগেই বিমানের এমার্জেন্সি মাস্ক থেকে একটু একটু করে অক্সিজেন লিক করছিল। সেই বিষয়ে কোনওভাবেই ওয়াকিবহাল ছিলেন না বিমানচালক। এই পরিস্থিতিতে সিগারেট ধরাতে একটি জোরালো বিস্ফোরণ হয় উড়ন্ত বিমানের মধ্যে। আর তার কিছুক্ষণ পরেই ৬৬ জন যাত্রীকে নিয়ে ভূমধ্যসাগরে ভেঙে পড়ে ওই বিমান।
জানা গিয়েছে, 2016 সালের মে মাসে ফ্রান্সের প্যারিস চার্লস দ্য গার্ল বিমানবন্দর থেকে মিশরের কায়রো যাচ্ছিল ওই A320 যাত্রীবাহী বিমানটি। কিন্তু প্যারিসের বিমানবন্দর ছাড়ার আর কিছু পরেই হঠাৎ সেটি ভূমধ্যসাগরের উপর দিয়ে ওড়ার সময় দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে। মৃত্যু হয় বিমানের মধ্যে থাকা ৬৬ জন যাত্রীরই। নিহতদের মধ্যে একজন ব্রিটিশ, ১২ জন ফরাসি পর্যটক, ৩০ জন মিশরীয় এবং দুজন ইরাক ও কানাডার নাগরিক ছিলেন বলে জানা যায়। ঠিক কি কারণে রহস্যজনকভাবে বিমানটি ভূমধ্যসাগরে ভেঙে পড়েছিল তা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় তদন্ত। সমুদ্রের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই বিমানের ব্ল্যাক বক্সও। এছাড়া আরও যে সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করা সম্ভব হয় সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে তদন্ত চালিয়ে সম্প্রতি ১৩৪ পাতার একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বিমান বিশেষজ্ঞরা। আর তাতেই সামনে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় বলে রাখা দরকার। আজকাল যে কোনও বিমানে যেমন ধূমপান যেরকম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ২০১৬ সালে কিন্তু তেমন ছিল না। ২০১৬ সালের মে মাসে যে সময়ে বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় সেই সময় বিমানের ককপিটে পাইলটরা সাধারণত শেষ সিগারেট খেতে পারতেন। সম্প্রতি ইতালির একটি সংবাদপত্রে এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তাতে বলা হয়েছে ২০১৬ সালের ১৯ মে যখন এই বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় ঠিক তার আগে থেকেই বিমানের ককপিটে অক্সিজেন লিকেজের শব্দ শোনা গিয়েছে। আর তার কিছুক্ষণ পর এই বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে সাগরের জলে আছড়ে পড়ে বলে খবর।