কলকাতা: বাবলু, বিলু, ভোম্বল, বাচ্চু, বিচ্ছু। এই পাঁচজন, আর তাদের সঙ্গে কানা পঞ্চু। এই পাঁচ কিশোর – কিশোরী রহস্যে জড়িয়ে পড়ত। আর তারা অপরাধীদের নাগালও পেয়ে যেত। তাদের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল বাবলুর দেশি কুকুর, পঞ্চু। তার একটা চোখ ছিল না বলে, ডাকা হত কানা পঞ্চু বলে৷ মিত্তিরদের বাগানবাড়ির সেই রহস্যের জাল ছেঁড়ার মধ্যে দিয়ে তারা হয়ে গিয়েছিল পঞ্চপাণ্ডব।
আরও পড়ুন- ৮৭ বছরে নতুন জীবনে পা, লেখাপড়া শুরু করলেন বৃদ্ধা! স্বপ্ন, অন্তত এক জনকে শিক্ষিত করে তোলা
বাংলা সাহিত্য জগতে নতুন এই পাঁচ কিশোর- কিশোরীদের নিয়ে শুরু হয়েছিল নতুন রহস্য রোমাঞ্চ। বাংলা সাহিত্যে শুরুর দিন থেকেই জাঁকিয়ে বসল পাণ্ডব গোয়েন্দা। লেখক সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের কলমে কিশোর কিশোরীদের জন্য ফুটে উঠল অনন্যসাধারণ সব রহস্য গল্প। গত শতকের ৯০ এর দশকে পঞ্চপাণ্ডবে মজে গিয়েছিল তখনকার কিশোর – কিশোরীরা। সেই স্রষ্ঠা আজ আর নেই৷ বাংলার সাহিত্য জগতে ইন্দ্রপতন। ৮২ বছর বয়সে প্রয়াত ‘পাণ্ডব গোয়েন্দা’র স্রষ্টা সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়। বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় সাহিত্য মহলে বিরাজ করতেন। তবে বড়দের জন্য গল্প, উপন্যাস লিখেছেন। শুক্রবার সকালে হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ভারতীয় এই বাঙালি সাহিত্যিকের জন্ম ১৯৪১ সালে। হাওড়ার খুরুট ষষ্ঠীতলায় জন্ম তাঁর। রহস্য ও গোয়েন্দা কাহিনি লেখার জন্যে তিনি খ্যাত ছিলেন। তাঁর সৃষ্ট জনপ্রিয়তম গোয়েন্দাকাহিনি পাণ্ডব গোয়েন্দা সিরিজ তাঁকে বাঙালি পাঠকদের কাছে অমর করে রাখবে।
আরও পড়ুন- চিনের গবেষণাগার থেকেই করোনার ঢেউ! দাবি এই গোয়েন্দা সংস্থার
শুক্রবার বেলা ১১টা ১০ মিনিট নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এই সাহিত্যিকের। ইদানিং বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। হাওড়ার এক নার্সিংহোমে চিকিৎসারত ছিলেন তিনি। সেখানেই প্রয়াত হন ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়। হাওড়ার রামরাজাতলার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এই নিয়ে তিনবার স্ট্রোক হয়েছিল তাঁর। ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তবে মার্চ মাসে তিনি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। শুক্রবার সকালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাংলার সাহিত্য জগতে। বর্তমান ও অতীতের বহু প্রজন্ম তাঁর লেখা পড়েই তাঁদের শৈশব জীবন কাটিয়েছে। বর্ষীয়ান এই সাহিত্যিকের মৃত্যুতে পাঠক ও তাঁর গুণগ্রাহীদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অমর সৃষ্টির জন্য চিরকাল জীবিত থাকবেন। সাহিত্যিক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া বাংলার সাহিত্য মহলে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”প্রিয় বান্ধবীর বরকে কেড়ে নিয়েছেন হংসিকা? Hansika Mohtani replies to trolls” width=”560″>
বাঙালির সাহিত্যে গোয়েন্দাদের উপস্থিতি বরাবরই রয়েছে। কিংবদন্তি ব্যোমকেশ বক্সী, ফেলুদা তো আছেই। এর পাশাপাশি অর্জুন, মিতিন মাসিরা তো আছেই। বাচ্চাদের জন্য আবার রহস্য নিয়ে এসেছিল ছোট্ট গোগোল। কিন্তু কিশোরদের জন্য নতুন করে এল পঞ্চপাণ্ডব। চলে গেলেন সাহিত্যিক। পড়ে রইল অসংখ্য রহস্য রোমাঞ্চ। আর অভিভাবকহীন হল পাণ্ডব গোয়েন্দা।