বর্বোরচিত অত্যাচার রুশ সেনার, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ইউক্রেনীয় তরুণীর

বর্বোরচিত অত্যাচার রুশ সেনার, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ইউক্রেনীয় তরুণীর

কিয়েভ: দেখতে দেখতে দু মাস পার করেছে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যকার সংঘাত। দু মাস ধরে চলা রুশ সেনার তাণ্ডবে ইতিমধ্যেই ধ্বংসপুরীতে রূপান্তরিত হয়েছে ইউক্রেনের ছবির মতো সুন্দর একাধিক শহর। সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরীর রূপ নিয়েছে রাজধানী কিয়েভও। দেশের অধিকাংশ নাগরিকই প্রাণভয়ে আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী দেশগুলির উদ্বাস্তু শিবিরে। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে পড়ে যারা দেশ ছাড়তে পারেননি এই মুহূর্তে তাঁদের পরিস্থিতির সবথেকে ভয়াবহ। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এক এক করে সামনে এসেছে ইউক্রেনের বাসিন্দাদের একের পর এক ভয়াবহ এবং নির্মম পরিণতির গল্প। কখনও সামান্য ওষুধ সংগ্রহ করতে বাইরে বেরিয়ে দিতে হয়েছে বেঘোরে প্রাণ, কখনও আবার একের পর এক রুশ সেনার যৌন লালসার শিকার হতে হয়েছে ইউক্রেনের সাধারণ বাসিন্দাদের। সম্প্রতি এমনই এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সকলের সামনে প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের এক গর্ভবতী’ তরুনী। ওই তরুণী জানিয়েছেন, সম্প্রতি তিনি এক রুশ সেনা আধিকারিকের হাতে ধর্ষিত হয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, জানা যাচ্ছে ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা, কিন্তু তা জানার পরেও তাকে ধর্ষণ করেছেন রাশিয়ার ওই আধিকারিক। তাকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার সকালেই প্রকাশ্যে এসেছে ১৬ বছর বয়সী ইউক্রেনীয় ওই তরুণীর ভয়াবহ সাক্ষাৎকার। যেখানে তিনি জানিয়েছেন সম্প্রতি এক রুশ সেনা আধিকারিক তাঁকে হুমকি দেয়, ‘যদি এক্ষুনি আমার শয্যাসঙ্গী না হও তাহলে আরও কুড়িজনকে ডেকে আনব। এরপরই ওই আধিকারিক ছয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে বলে খবর। এমনকি ধর্ষণ শেষে তাকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টা করে ওই সেনা আধিকারিক। নৃশংস এই ঘটনাটি ইউক্রেনের খারসোলের কাছে একটি গ্রামে ঘটেছে। আক্রান্ত ওই তরুণী ওই গ্রামেরই বাসিন্দা বলে খবর। দিন কয়েক আগেই গ্রামটির দখল নিয়েছে রুশ বাহিনী। তারপর থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর এইভাবেই নৃশংস পৈশাচিক অত্যাচার চালাচ্ছে রাশিয়ার সেনা আধিকারিকরা।

 সম্প্রতি আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ সংস্থার হাত ধরে প্রকাশ্যে এসেছে এই খবর। ওই সংবাদ সংস্থাকেই সাক্ষাৎকারে পুরো বিষয়টি জানিয়েছেন আক্রান্ত ওই তরুণী। তার কথায়, ‘দিন কয়েক আগে রুশ বাহিনী গ্রামটির দখল নেওয়ার পরেই আমরা প্রত্যেকে বাড়ির নিচের বাংকারে আশ্রয় নিই। এইভাবে এক-দুই দিন থাকার পরে আমাদের খাবার শেষ হয়ে যায়। খাবার সংগ্রহ করতে যখন আমি বাইরে বেরিয়েছিলাম সেই সময় মদ্যপ এক রুশ সেনার নজর আমাদের ওপর পড়ে। ঘটনাস্থলে আমার সঙ্গে আমার দুই বোন ও আমাদের মা ছিল। মদ্যপ ওই সেনা আধিকারিক প্রথম এগিয়ে এসে আমার বোনদের বয়স জানতে চায়। আমি জানাই একজনের বয়স ১২ এবং অপরজনের বয়স ১৪ বছর। সেইসঙ্গে আমি আমার নিজের বয়স ১৬ বছর বলেও জানাই। প্রথমে ওই আধিকারিক আমার মাকে কাছে ডাকে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তার মত পরিবর্তন হয় এবং সে আমাকে ডাকে। আমি এগিয়ে গেলে সে চিৎকার করে আমাকে পোশাক খুলতে বলে। প্রথমে আমি তার কথায় রাজি না হওয়ায় সে আমাদের হুমকি দিয়ে বলে আমার সঙ্গে না শুলে আরও কুড়িজনকে ডেকে আনব।’

এর সঙ্গেই ওই তরুণী জানিয়েছেন এই ঘটনা একবার নয় একাধিকবার ঘটেছে ওই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে। পরেরদিন আরও এক সেনা আধিকারিক ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের হুমকি দেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × five =