ওয়াশিংটন: ২০২০ সালে মাত্র চার মাসের মধ্যে আন্টার্কটিকায় কাছের দ্বীপপুঞ্জগুলো কেঁপে উঠেছিল ৮৫০০০ বার। তার মধ্যে বেশ কয়েকটির কম্পনমাত্রা বেশ বেশি ছিল। কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আন্টার্কটিকায় জলের নীচে দীর্ঘদিন ধরে একটি আগ্নেয়গিরি সুপ্ত ছিল। সেটি জেগে ওঠার কারণে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল।
কমিউনিকেশন আর্থ অ্যান্ড এনভারমেন্ট জার্নালে সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের আগস্ট মাস থেকেই আন্টার্কটিকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প দেখতে পাওয়া যায়। সেই বছর নভেম্বরের পর থেকে সেই ভূমিকম্পের হার অনেকটা কমে যেতে থাকে। এই প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীর বলেন, মাটির নীচে একটি আগ্নেয়গিরি ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। কিন্তু সেটি হঠাৎ করে জেগে ওঠে। ভূমিকম্পের সময় জ্বলন্ত ম্যগমা ভূপৃষ্ট ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই চার মাসের মধ্যে ঘন ঘন ভূমিকল্প বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ২০২০ সালের আগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। তবে প্রথম আন্টার্কটিকায় এই অতি ঘন ঘন ভূমিকম্প দেখতে পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যে জায়গাটিতে এমন ঘন ঘন ভূমিকল্প অনুভব করা গিয়েছিল, সেটি ওরকা সিমাউন্ট নামে পরিচিত। এখানেই একটি ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি ব্রান্সফিল্ড প্রণালী থেকে ৯০০ মিটার ওপরে অবস্থান করে। দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের কাছে এটি অবস্থিত। এই দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের কিং জর্জ দ্বীপে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে এই সিরিজের প্রথম ভূকম্পন অনুভূত হয়। এখানেই প্রথম ছোট ছোট ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল। এই দ্বীপটিকে কেন্দ্র করেই বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ভূকম্পনের মাত্রা খুব অল্প ছিল। তবে দুটো ভূকম্পন বেশ জোরেই অনভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে তার একটার মাত্রা ছিল ৫.৯ ও অন্যটির মাত্রা ছিল ৬। ২০২০ সালের নভেম্বরে এই দুটো ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তারপরেই এলাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প বন্ধ হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, জলের নীচে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে সমুদ্রের নীচে অগ্ন্যুৎপাতের সরাসরি কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন।