সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীকে সরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী! পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে টেনশনে তৃণমূল?

সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীকে সরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী! পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে টেনশনে তৃণমূল?

নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। পঞ্চায়েতে সাফল্য না পেলে তার ফল যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে পড়বে সেটা ভাল করেই জানে তৃণমূল। কিন্তু সাগরদিঘির উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তৃণমূল সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছে। বাম-কংগ্রেস যদি পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করে তবে আগামী দিনে তৃণমূলকে যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে সেটা ভাল করেই জানেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মন্ত্রী গোলাম রাব্বানিকে। তাঁকে উদ্যানপালন দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতর নিজের হাতেই রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখানেই শেষ নয়, সংখ্যালঘুদের স্বার্থে সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কাজকর্ম দেখার জন্য একটি কমিটি তৈরি করবেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটিতে কারা থাকবেন সেই নামগুলি শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। এর আগে সাগরদিঘিতে তৃণমূলের পরাজয়ের পর উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক মোশারফ হোসেনকে সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ সংখ্যালঘু সংক্রান্ত প্রত্যেকটি জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী বদল আনছেন। এতটাই চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন তিনি?

 

তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতা আসার পর থেকে সংখ্যালঘুদের স্বার্থে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। রাজ্যে চালু হয়েছে ইমাম ভাতা। সিএএ এবং এনআরসি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মমতা যেভাবে যুদ্ধং দেহি ভঙ্গিতে রাস্তায় নেমেছেন তা আশ্বস্ত করেছে বাংলার সংখ্যালঘুদের। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাগরদিঘির মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেন্দ্রে উপনির্বাচনে তৃণমূলের হার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। হারের কারণ খুঁজতে তিনি বিশেষ কমিটি পর্যন্ত করেছেন। এবার দফতরের মন্ত্রীকে পর্যন্ত সরিয়ে দিলেন।

 

সাম্প্রতিককালে আনিস খানের অস্বাভাবিক মৃত্যু, আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে প্রায় দেড় মাস জেলবন্দি করে রাখার ঘটনায় তৃণমূলের উপর ক্ষুব্ধ  সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশ, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। এছাড়া আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থা চলছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পর্যাপ্ত থাকার ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। এছাড়া আরও কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। এর পাশাপাশি বাম-কংগ্রেস জোট বহুদিন ধরে অভিযোগ করছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে নাকি সেটিং রয়েছে। তাই লোকসভায় কংগ্রেস নেতৃত্ব বিজেপি বিরোধী কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করলে তাতে সামিল হয় না তৃণমূল। এই অভিযোগ বহুদিন ধরেই তৃণমূলকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তবে কি এই সমস্ত কারণেই তৃণমূলের উপর আস্তে আস্তে ভরসা হারাতে শুরু করেছেন সংখ্যালঘুরা? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। ঠিক এই আবহের মধ্যে সাগরদিঘিতে বিপুল ভোটে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। আর তাতেই ঘুম ছুটেছে শাসক দলের। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল সংখ্যালঘু ভোটকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =