israel
নিজস্ব প্রতিনিধি: ভয়াবহ যুদ্ধ হচ্ছে ইজরায়েল ও হামাসের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। মৃত্যু মিছিল দেখছে গোটা বিশ্ব। যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই ভয়াবহ যুদ্ধ বহু শিশু, মহিলা, বৃদ্ধের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আমেরিকার দাবি শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করেছে হামাস। যদিও সেই দাবি অস্বীকার করেছে হামাস। অন্যদিকে ইজরায়েলের পাল্টা আক্রমণে প্যালেস্টাইনেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। ঘটনা হল দীর্ঘদিন ধরেই দু’পক্ষের বিবাদ চলছে। আর এই হামাসের বাড়বাড়ন্তের জন্য ইজরায়েল অনেকাংশে দায়ী বলে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদতেই যেমন ওসামা বিন লাদেন তৈরি হয়েছিলেন, ঠিক একই ভাবে ইজরায়েলের মদতে তৈরি হয়েছে শেখ আহমেদ ইয়াসিন, যার হাত ধরেই তৈরি হয়েছে হামাস। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা গেল যারা স্রষ্টা তাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন লাদেন এবং ইয়াসিন। যা কিনা বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। তাই আজ ইজরায়েল যে পরিস্থিতিতে পড়েছে সে জন্য তারা নিজেরাই অনেকটা দায়ী। কিন্তু কেন? ঘটনা হল আশির দশকে আফগানিস্তানে যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন দখলদারি চালাচ্ছে, তখন তাদের থামাতে লাদেনকে মদত দিয়েছিল আমেরিকা। সোভিয়েতের বিরুদ্ধে লাদেনকে ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে প্যালেস্টাইনের কিংবদন্তি নেতা ইয়াসের আরাফাতের গুরুত্ব কমাতে তাঁদের বিরুদ্ধে একটি পৃথক সংগঠন গড়ে তুলতে চেয়েছিল ইজরায়েল। তখন ইজরায়েলের মদতে ইয়াসিনের উত্থান হয়। আর একটা সময় ইয়াসিন হামাস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন।
তখন ইজরায়েল ইয়াসের আরাফত ইস্যুতে অনেকটাই নিশ্চিন্ত বোধ করে। কিন্তু সেই ধারণা যে কতটা ভুল ছিল তা ভবিষ্যতেই জানা যায়। একই ভাবে আমেরিকাকেও লাদেন ইস্যুতে ভয়ঙ্কর মাসুল দিতে হয়। টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ঘটনায় নড়ে যায় গোটা বিশ্ব। আর ২০২৩-এ হামাসের আক্রমণে বিধ্বস্ত ইজরায়েল। অবশ্য ইজরায়েলও পাল্টা প্রত্যাঘাত করছে। যা সামলানো প্যালেস্টাইনের পক্ষে কঠিন হবে। কিন্তু এটাও ঠিক ইজরায়েলের অসংখ্য মানুষ যেভাবে প্রাণ হারালেন, তার জন্য সে দেশের পূর্বতন রাষ্ট্রপ্রধানরা কী দায়ী নন? যে ধ্বংসের বীজ তাঁরা বপন করেছিলেন আজ সেটার বিশাল মাসুল দিতে হচ্ছে সে দেশের মানুষকে।
এই পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বের একটাই প্রার্থনা, অবিলম্বে বন্ধ হোক এই যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও থামেনি। সেখানে নতুন করে হিংসার আগুন জ্বলে উঠল মধ্যপ্রাচ্যে। হিংসার আগুন কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক তাজা প্রাণ। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেটা যে হবে, তা তাঁরা আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। শেষপর্যন্ত তাঁদের আশঙ্কাই বাস্তব রূপ নিয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাখ্যা, হামাস যা করেছে তা যেমন ঠিক নয়, তেমনই ইজরায়েলের ভূমিকাও সমর্থনের যোগ্য নয়। অর্থাৎ এক হাতে যে সেখানে তালি বাজছে না, তা স্পষ্ট। এই অবস্থায় দু’পক্ষেরই শুভবুদ্ধির উদয় না হলে শান্তি আসবে না। তবে তা আদৌ দেখা যাবে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।