নিজস্ব প্রতিনিধি: বকেয়া ডিএ দিতে হবে। এই দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। আর মুখ্যমন্ত্রীর বিরূপ মন্তব্যের (আন্দোলনকারীদের চোর- ডাকাত বলেছেন) প্রতিবাদে ফের কর্মবিরতির ডাক দিলেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। আগামী ৬ এপ্রিল রাজ্য জুড়ে সমস্ত প্রশাসনিক কাজ বয়কটের কথা ঘোষণা করেছেন তাঁরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ এবং যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে এই কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি কর্মচারীদের সমস্ত সংগঠন যাতে এই কর্মসূচিতে যোগ দেয় সেই আবেদনও করা হয়েছে। বকেয়া ডিএ মেটানোর পাশাপাশি শূন্য পদে নিয়োগ-সহ বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার ধর্মতলায় ‘মহাসমাবেশের’ ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সমাবেশ শেষে বৈঠক করেন সংগঠনের নেতারা। ঠিক হয় মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তাঁদের ‘চোর ডাকাত’ বলে তোপ দেগেছেন তার প্রতিবাদে ফের কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হবে। উল্লেখ্য বুধবার ধর্না মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের উদ্দেশে বলেছিলেন,”এরা সব চিরকুটে চাকরি পেয়েছিল। সেই চোর ডাকাতগুলো গিয়ে বসে আছে ডিএ-র মঞ্চে”। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে রাজ্য জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের সংগঠন মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আসলে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভের মাত্রা এতটা যে বাড়বে সেটা নবান্ন ভাবতে পারেনি। যত দিন গড়াচ্ছে ততই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ছে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি প্রত্যেকটি বিরোধী দলের সমর্থন পাচ্ছেন শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে বসা আন্দোলনকারীরা। এতে তাঁদের মানসিক জোর আরও বাড়ছে। যা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের জন্য একেবারেই স্বস্তির খবর নয়। যেভাবে আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের নৈতিক সমর্থন রয়েছে তাঁদের পিছনে। কিছু দিন আগেই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। আবার সেই ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এটা যে রাজ্য সরকারের পক্ষে কতটা অস্বস্তিকর সেটা সকলেই বুঝতে পারছেন। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তাঁদের ‘চোর ডাকাত’ বলেছেন সেটিকে একেবারেই ভালভাবে দিচ্ছে না রাজ্যবাসী। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে নবান্ন যদি এমন ব্যবহার করতে থাকে তাহলে প্রশাসনের দৈনন্দিন কাজ চালানো তো কঠিন হয়ে পড়বে। কখনও মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের প্রশংসা করছেন, আবার কখনও তাঁদের একাংশকে চোর-ডাকাত বলছেন। যথারীতি মুখ্যমন্ত্রীর এমন অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে ওয়াকিবহাল মহল। তাই ডিএ আন্দোলন যেভাবে আরও তীব্রতর হচ্ছে তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মোকাবিলা কীভাবে করবেন তিনি সেটাই দেখার।