মিলল না রক্ষাকবচ! অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে অনুমতি হাইকোর্টের, সঙ্গে জুড়ল জরিমানা

মিলল না রক্ষাকবচ! অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে অনুমতি হাইকোর্টের, সঙ্গে জুড়ল জরিমানা

হাকিম বদলালেও বদলাল না হুকুম।  কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল রাখলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। ফলে খারিজ হয়ে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষের আবেদন।  বৃহস্পতিবার কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় এমনই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। আদালতের নির্দেশ, কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআই। সেইসঙ্গে দুজনকে অবিলম্বে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা জমা দিতে হবে। ফলে, ইডি-সিবিআইয়ের অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে আর কোনও বাধাই রইলো না। 

গত শুক্রবারও এই মামলায় অভিষেককে রক্ষাকবচ দেয়নি কলকাতা হাই কোর্ট। ওই দিন শুনানিতে অভিষেকের আইনজীবী হাই কোর্টের পুরনো নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তৃণমূল নেতাকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেওয়ার আর্জিও জানানো হয়। কিন্তু, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জিজ্ঞাসাবাদে স্থগিতাদেশ দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। 

মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষ হয়। আদালত রায়দান স্থগিত রাখে। বৃহস্পতিবার, পূর্ববর্তী নির্দেশই বহাল রাখলেন মামলার নতুন বিচারপতি। এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত মামলার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাইলে জেরা করতে পারে। বৃহস্পতিবার একই নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহাও।  পাশাপাশি অভিষেক এবং কুন্তল দু’জনকেই মাথাপিছু ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তথা বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের দাবি ছিল, ইডি এবং সিবিআইয়ের তরফে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য তাঁর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন কুন্তল ঘোষ। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দেন হেস্টিংস থানাতেও। 

সেই চিঠির বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, ইডি বা সিবিআই প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদে স্থগিতাদেশ দেয়।  

পরবর্তীতে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার অপরাধে সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানোর নির্দেশ দেয়। মামলা যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। 

সেখানে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পর্যবেক্ষণ’ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান অভিষেক। এমনকি কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদনও জানান। তবে সেই আবেদনে সারা দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। আবেদন খারিজ করে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়েছিলেন, ‘৭ দিনে ২৪ ঘণ্টা আদালতের দরজা খোলা থাকবে। তিনি যখন খুশি আদালতে আসতে পারবেন। তবে কোনও রক্ষাকবচ দেওয়া যাবে না।’ 

হাইকোর্টের এমণ নির্দেশে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়েন অভিষেক। বৃহস্পতিবার সেই অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − twelve =