ইজরায়েলে শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় আমেরিকা, আদৌ সফল হবে এই প্রয়াস?

ইজরায়েলে শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় আমেরিকা, আদৌ সফল হবে এই প্রয়াস?

america

জেরুসালেম:  পাঁচ দশক আগে সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে যুদ্ধের বিরুদ্ধে সেই বার্তা আজ যেন নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। গানে গানে বলা হয়েছিল, তোরা যুদ্ধ করে করবি কি বল! সত্যিই তাই, ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে তা নিয়ে এই প্রশ্নই করছে বিশ্বের প্রত্যেকটি শান্তিকামী দেশ। এই পরিস্থিতিতে শনিবার উত্তর গাজায় বসবাসকারী প্যালেস্তিনিয়দের সময়সীমা দিয়ে ইজরায়েল জানিয়ে দিয়েছে তাঁরা অবিলম্বে সেই জায়গা ছেড়ে দক্ষিণ গাজায় না গেলে পরিণাম ভয়ঙ্কর হবে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে এবার ইজরায়েল নতুন করে উত্তর গাজা অংশে ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলা চালানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। যে কোনও মুহূর্তে সেই হামলা শুরু হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ আবার সেই মিসাইল হানা, শূন্য থেকে গোলা বর্ষণ ও স্থলসেনাদের হাতে থাকা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল থেকে গুলি ছিটকে আসা। ইতিমধ্যেই এই যুদ্ধের ফলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাই নতুন করে ভয়াবহ হামলা হলে মৃতের সংখ্যা যে আরও বাড়বে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।

ইতিমধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। মৃত্যু মিছিল দেখছে গোটা বিশ্ব। কবে যুদ্ধ থামবে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। এই ভয়াবহ যুদ্ধ কেড়ে নিয়েছে বহু শিশু, মহিলা, বৃদ্ধের প্রাণ।

এই আবহের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফোনে কথা বলেছেন ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইন সরকারের সঙ্গে। ঘটনা হল এই যুদ্ধে ইজরায়েলকে সমর্থন করছে আমেরিকা। কিন্তু তা সত্ত্বেও যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত প্যালেস্টাইনের মানুষকে সাহায্য করার জন্য তাদের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন করেছেন বাইডেন। সেই সঙ্গে কথা বলেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গেও। যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু যুদ্ধ থামানোর ক্ষেত্রে বাইডেনের এই প্রয়াস কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ এই যুদ্ধে প্রকাশ্যে তিনি ইজরায়েলের পাশে রয়েছেন। তাই তাঁর প্রস্তাব কতটা প্যালেস্টাইন সরকার মেনে নেবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

ইজরায়েলের অভিযোগ এই যুদ্ধে হামাস গোষ্ঠীকে সরাসরি মদত দিচ্ছে ইরান। তুরস্ক সীমান্ত দিয়ে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো হচ্ছে, হামাসকে। অন্যদিকে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাও এই যুদ্ধে হামাসের পাশে থাকার কথা ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। বিভিন্ন দেশ বা সশস্ত্র গোষ্ঠী যদি এই যুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে জড়িয়ে পড়তে থাকে, তবে সেটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা বোঝাই যায়। আন্তর্জাতিক মহলের একাংশ কিছুটা হলেও এবার তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা করছেন। তাই ইজরায়েল যে সময়সীমা দিয়েছিল উত্তর গাজায় বসবাসকারী মানুষের উদ্দেশে, তা শনিবার শেষ হয়ে যাওয়ার পর গোটা বিশ্বের উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছে। তাই সবার একটাই প্রশ্ন, কোন ফর্মুলায় যুদ্ধ থামবে? কিন্তু এর উত্তর থেকে যাচ্ছে সময়ের গর্ভেই।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 − five =