শুক্রবার বিকেল ৩টে বেজে ২৯ মিনিটে এইভাবেই শালিমার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তবে সেই যাত্রা গন্তব্যে পৌছনোর আগেই থেমে যায়। শালিমার থেকে যাত্রা শুরু করার কয়েক ঘণ্টা পরেই ওড়িশার বাহানাগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাত্রীবাহী এই ট্রেন… অভিশপ্ত ট্রেন যাত্রায় শেষ হয়ে যায় ২৮৮ জনের জীবন। ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি, স্বজনহারাদের হাহাকারের স্মৃতি নিয়ে ফের একবার করমণ্ডল এক্সপ্রেস শালিমার স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করল… দুর্ঘটনার ৪ দিন পর ফের চাকা গড়াল ট্রেনের।
বুধবার ট্রেন ধরার আগে স্টেশন চত্বরে ছিল সেই একই ছবি। ট্রেনের অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে ভিড় করেন বহু যাত্রী। জেনারেল বগিতে কার্যত তিল ধারণের জায়গা ছিল না। কেউ গেলেন কাজের টানে। রুজিরোজগারের আশায়। কেউ গেলেন চিকিৎসার জন্য। কামরায় কামরায় যাত্রীদের মধ্যে শুধুই শুক্রবারের সন্ধ্যার আলোচনা। দুর্ঘটনার পর থেকে টানা চারদিন বন্ধ ছিল আপ সালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যদিও ডাউন লাইনে করমণ্ডলের পরিষেবা চালু ছিল। রেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালেই হাওড়ার শালিমার স্টেশনে পৌঁছেছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বুধবার পুরনো সময়ে পুরনো রুটে যাত্রা শুরু করল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যাত্রাপথে যা ছুঁয়ে যাবে শুক্রবারের সেই বালেশ্বরের অদূরে থাকা বাহানগা বাজার স্টেশন… ট্রেন ছাড়ার আগে শালিমার স্টেশনে নিরাপত্তার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখলেন রেল আধিকারিকরা। এদিন ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পরে ট্রেনের বি-৩ কোচের এসি বন্ধ হয়ে যায়। যার জন্য সাঁতরাগাছি স্টেশনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। বিভ্রাট সারিয়ে ফের চলতে শুরু করে করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
শুক্রবার রেল দুর্ঘটনার পরপরই শুরু হয়েছিল উদ্ধারকাজ। শনিবার থেকে উদ্ধার কাজ চালানোর পাশাপাশি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রেললাইন মেরামতির কাজ শুরু করে রেল। এর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে একটি মালগাড়ি চালানো হয় সংশ্লিষ্ট লাইনে। রবিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ প্রথম মালগাড়ি চালানো হয় অভিশপ্ত লাইনে। এর প্রায় এক ঘণ্টা বাদে রাত ১১টা ৩৯ মিনিটে চালানো হয় আরও একটি মালগাড়ি। আপ লাইনে প্রথম ট্রেন চালানো হয় রবিবার রাত ১২টা ৫ মিনিটে। সেই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট রেলপথে ছুটে গিয়েছে একাধিক ট্রেন। সোমবার গিয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। তার পরে আপ লাইন দিয়ে চালানো হয়েছে ফলকনুমা এক্সপ্রেস। সোমবারই ওই লাইন দিয়ে ৪০টির বেশি ট্রেন চলাচল করেছে। যেহেতু ওই রেলপথ সদ্য মেরামত হয়েছে, তাই ওই জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনগুলির গতিবেগ কম রাখা হচ্ছে। ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার গতিবেগে ওই জায়গা দিয়ে চালানো হচ্ছে ট্রেন।