মনোনয়ন পেশের প্রথমদিনেই রক্ত ঝরল বাংলায়! কংগ্রেসকর্মীকে গুলি করে খুন! খুনের নেপথ্যে কারা?

মনোনয়ন পেশের প্রথমদিনেই রক্ত ঝরল বাংলায়! কংগ্রেসকর্মীকে গুলি করে খুন! খুনের নেপথ্যে কারা?

পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণা হতেই রক্ত ঝরল বাংলায়। ভোটের এখনও একমাস দেরি। শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। আর মনোনয়ন পেশের প্রথমদিনেই চলল গুলি! গুলিতে প্রাণ হারালেন এক কংগ্রেস কর্মী। মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম থানার নলদ্বীপ রতনপুর এলাকার ঘটনা।

বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ। মনোনয়নের প্রথম দিনেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। বাদ গেল না মুর্শিদাবাদ। দিনের শেষে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারালেন এক কংগ্রেস কর্মী।  কংগ্রেস কর্মী ফুল চাঁদ শেখকে এলোপাথাড়ি গুলি করে দুষ্কৃতিরা খুন করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে কংগ্রেস।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়েছিল ফুল চাঁদ শেখ। সেই সময় আচমকা তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে প্রথমে লাঠিসোটা-বাঁশ দিয়ে  ফুল চাঁদ শেখকে মারধর করতে শুরু করে। এরপরই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে পালায়।  পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয় ফুলচাদকে। দুষ্কৃতিদের বাধা দিতে গেলে কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীও আহত হন। রক্তাক্ত অবস্থায় ফুলচাঁদকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কান্দি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়তেই মৃত্যু হয় গুলিবিদ্ধ কংগ্রেস কর্মীর। 

ঘটনায় আহতদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন ফুলচাঁদ। কেরলে থাকতেন। দিন কয়েক আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন। আর তারমধ্যেই এই খুনের ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পর পর ছয় রাউন্ড গুলি করা হয় ফুলচাঁদকে। ফুলচাঁদ খুনের ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

কংগ্রেস কর্মী খুনের তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম কাজল শেখ ও সফিক শেখ। ধৃতেরা রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা। সূত্রের খবর,  খুনের ঘটনায় জেলা পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

শনিবার নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘একজন তো মারা গিয়েছেন। তাঁর ডেড বডি দেখে তো আর লাভ নেই। আহত হয়েছেন ৩ জন। কিন্তু যিনি খুন হলেন, তিনিই যেন অপরাধী! তাঁদের আশপাশে পুলিশ ঘুরছে। অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রামে আসতে বারণ করছে। আর মৃতের পরিবারকে বলছে, বাড়ি থেকে না বেরোতে!’’ খড়গ্রাম পুলিশের মদতে এই খুনের ঘটনা, বলেও দাবি করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। 

মনোনয়নের প্রথম দিনেই ‘রাজনৈতিক হত্যা’র অভিযোগে উত্তপ্ত পরিস্থিতি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে। গোটা গ্রামে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, এলাকায় রয়েছে চাপা উত্তেজনা। কংগ্রেসকর্মীর খুনকে  কেন্দ্র করে সরগরম রাজ্য রাজনীতিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *