কৃষ্ণের টানে রাধা বেরিয়েছিলেন অভিসারে। কাঁটায় ভরা রাস্তা তখন রাধার কাছে ছিল মসৃণ। সেই রাধারা যেন আজও বেঁচে। কৃষ্ণের টানে যে কোনও পরীক্ষা দিতে তাঁরা রাজি হয়ে যান অবলিলায়।এরকমই এক রাধার নাম জারিনা বেগম। ত্রিপুরার তেলিয়ামুড়ার বাসিন্দা জরিনা প্রেমে পড়েন রঞ্জিত দেবনাথের। সে প্রেমের তীব্রতা কতটা তার প্রমাণ মন্দিরে জারিনা ও রঞ্জিতকে আগুনকে সাক্ষী রেখে বিয়ে। সিথিতে সিঁদুর, কপালে চন্দনের কলকা, নববধূ জারিনা বেগম। কোনওরকম বাধা নেই মনের গভীরে। রঞ্জিতকে বিয়ে করে যেন প্রেমকে জয় করেছেন জারিনা। তেলিয়ামুড়ার জারিলংপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জারিনা প্রেমে পড়ে খোয়াই থানাধীন উত্তর চেবরী গ্রামের রঞ্জিত দেবনাথের। বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের পরিচয়। বিষয়টিকে সহজ সরল ভাবেই নিলেন জারিনা। ঠিক কী করলেন প্রত্যন্ত গ্রামের নিতান্ত সহজ সরল জারিনা বেগম।
আদালতে হলফনামা জমা দিয়েই নিরঞ্জনকে আগুনকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলেন জারিনা। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে চলা প্রেমের সম্পর্কের সঠিক পরিণতি দিতে চেয়েছিলেন জারিনা। একেবারে মন্ত্র উচ্চারণ করে মন্দিরে বিয়ে সেরে ফেললেন জারিনা। নিজেই জানালেন মনের কথা শুনেই এই পদক্ষেপ।
ত্রিপুরার কল্যানপুরী থানার অন্তর্গত ত্রিপুরেশ্বরী রাধা গিরিধারী শিব মন্দিরে বিয়ে সারলেন জারিনা ও রঞ্জিত। বিয়ের পর নববধূর নাম পরিবর্তি হয়ে সোনালী দেবনাথ। স্বামী রঞ্জিন দেবনাথের সঙ্গে মালা বদলের পর খুশি জারিনা ওরফে সোনালী। পথটা সহজ ছিল না। পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে সমাজের সঙ্গে লড়াই করেই জারিনা আজ সোনালী। হাত ধরে আছেন রঞ্জিতের। তাঁর প্রেম সফল। জারিনাকে সমর্থন করেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন রঞ্জিতের পরিবার। বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের খোয়াই ত্রিপুরা জেলার চেয়ারম্যান কানাই শীল সহ প্রমুখ। মন্দির চত্ত্বরেও ওই অভিনব বিয়ে ঘিরে ভিড় চোখে পড়ে। সবমিলিয়ে বলাই জয় ভালোবাসাপ পথেই ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসাকে জয়। যেখানে নেই কোনও গ্লানি। জারিনার পরিবারও তাঁর পাশে থাকবে বলেই আশাবাদী নববধূটি। আপাতত সেই জারিনাই সোনালি।