কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে তো? পঞ্চায়েতে এবার প্রথম থেকেই লড়াই

কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে তো? পঞ্চায়েতে এবার প্রথম থেকেই লড়াই

নিজস্ব প্রতিনিধি: এবার আর গতবারের মতো একতরফা ‘খেলা’ হবে না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এই দাবি বিগত কয়েক মাস ধরেই করে আসছে বিরোধীরা। সেটা যে একেবারে ফাঁকা আওয়াজ ছিল না তা বোঝা গেল পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে। শাসক দলের সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়ে যতটা পেরেছেন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিরোধী দলের প্রার্থীরা।  বস্তুত মনোনয়নকে কেন্দ্র করে এমনটা যে হবে সেটা ভাবা যায়নি। মনোনয়ন পর্ব থেকেই ‘বুলেট রাজ’ শুরু হয়ে যাবে এতটা ধারণা করতে পারেনি কেউই। তা সত্ত্বেও বিরোধীরা লড়াইয়ের ময়দান ছাড়েনি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে গোটা রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু হাইকোর্টের এমন নির্দেশের পরেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

 

কারণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা কোথায় ডিউটি করবেন, বুথের বাইরে থাকবেন না এলাকায় টহল দেবেন, ইত্যাদি সম্পর্কে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি ভোটের ডিউটিতে থাকবেন রাজ্য পুলিশের কর্মীরা। তাঁরা বাহিনীর সঙ্গে কতটা সহযোগিতা করবেন তার উপরেই নির্ভর করে আছে অনেক কিছু। বিরোধীদের আশঙ্কা রাজ্য নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যতটা পারবে নিষ্ক্রিয় করে রাখার চেষ্টা করবে। বুথের ভিতরে বিরোধী দলের এজেন্টরা কতটা সুরক্ষিত থাকবেন, ভোটাররা নিজের ভোট কতটা নিজে দিতে পারবেন সেটা নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই নির্বাচনের দিন বুথ সামলানোর ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।

 

পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই বিরোধীরা আওয়াজ তুলেছিল এবার এক ইঞ্চি জমিও তৃণমূলকে ছাড়া হবে না। সেই সূত্রে বহুদিন ধরেই গ্রাম বাংলার নির্বাচনকে ঘিরে লড়াই লড়াই গন্ধ ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৪ শতাংশ আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। সেখানে ভোটের আগেই জয়ী হয়ে যান তৃণমূল প্রার্থীরা। সেই জায়গা থেকে এবার বেশির ভাগ কেন্দ্রেই লড়াই হচ্ছে। অর্থাৎ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারবে না তৃণমূল। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সতর্ক পাহারায় যদি পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় তাহলে সমস্ত বিরোধী দলের দাবি তাদের ফল খুব ভাল হবে। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি যেভাবেই ভোট হোক না কেন উন্নয়নের স্বার্থে মানুষ তাদেরই ভোট দেবে। কিন্তু তৃণমূলের এই দাবির পরেও প্রশ্ন থেমে থাকছে না। যদি সত্যিই এত উন্নয়ন তারা করে থাকে, তাহলে বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করায় তাদের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠবে কেন? তাহলে তৃণমূল মুখে যে দাবি করছে তা কী সত্যি নয়?  এই চর্চাই চলছে রাজ্য জুড়ে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচন কতটা সুষ্ঠুভাবে হবে তা নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ঠিকঠাক মোতায়নের উপরেই। তাই রাজ্য নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে ভোট পরিচালনা করবে এমনটাই সবার প্রত্যাশা। সেটা বাস্তবে কতটা দেখা যায় এখন তারই অপেক্ষা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − two =