একই পরিবার, এক সঙ্গেই ওঠাবসা। সময় পেলেই গল্প করতে একে অন্যের বাড়িতে ছোটেন। ভাল-মন্দ রান্না হলে যেমন বাটি চালাচালি হয় তেমনই মনোমালিন্য হলে রাগ-অভিমানও আছে। একসঙ্গে ঘরকন্না করতে করতে বন্ধু হয়ে ওঠা সেই জায়েরা এবার ভোটের ময়দানে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে পৃথক তিন দলের হয়ে একই আসন থেকে লড়ছেন পুনম চক্রবর্তী, পর্ণা নাগ চক্রবর্তী ও কান্তা চক্রবর্তী। সম্পর্কে আবার তাঁরা তারকা সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর মামি। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরাতন পান্ডাপাড়া ১৭/১৫৫ নম্বর বুথ থেকে প্রার্থী হয়েছেন এই ৩ জা। একে অপরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেমেছেন…
বড় জা কান্তা চক্রবর্তী কংগ্রেস প্রার্থী। মেজো জা পর্ণা নাগ চক্রবর্তী সিপিএমের হয়ে লড়ছেন আর ছোট জা পুনম চক্রবর্তী লড়ছেন ঘাসফুল প্রতীকে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ মিটে গেছে আগেই, এবার প্রচারের তোড়জোড় শুরু করতে চলেছেন এই ৩ প্রার্থী। ব্যালটের লড়াই যে প্রতীকেই হোক না কেন নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে অবশ্য বেশ সচেতন তিনজন। রাজনীতির ময়দানে লড়াই থাকলেও তাদের সম্পর্কে কোন ফাটল ধরবে না বলেই জানিয়েছেন তৃনমুল কংগ্রেস প্রার্থী পুনম চক্রবর্তী।
সিপিআইএমের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন পর্ণা নাগ চক্রবর্তী। একসময় ছাত্র রাজনীতি করলেও বিয়ের পর সংসারের কাজের চাপে সাময়িক ছেদ পড়ে। এবার ফের রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন। ভোটের কোনও ছাপ বাড়ির ভিতরে পড়বে না বলেই জানিয়েছেন সিপিএম প্রার্থী পর্ণা। বড় জা কান্তা চক্রবর্তী দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের টিকিটে। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তিনিও।
জলপাইগুড়ির পুরাতন পাণ্ডাপাড়ার পুরনো বাসিন্দা চক্রবর্তীরা। সেই বাড়িরই ৩ বউ ভোটের ময়দানে। পরিবারের সদস্য তথা তৃণমূল নেতা রাম চক্রবর্তী বলেন, আমরা রাজনীতির সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক গুলিয়ে ফেলি না। বাড়ির বাইরে যার জন্য গলা ফাটাই না কেন, বাড়ির ভিতরে আমরা সবাই এক। রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও ভোটে জেতার ব্যাপারে সকলেই ১০০% শতাংশ আশাবাদী। কিন্তু, একই বাড়ি থেকে ৩ জন প্রার্থী হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন পরিবারের বাকি সদস্যরা। কাকে ভোট দেবেন আর কাকে দেবেন না! এটাই এখন চিন্তার বিষয় তাদের কাছে।
ভোট রাজনীতিতে পরিবারের লড়াই নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু এবার সেই লড়াইয়ে সামিল হয়েছে সাংসদ অভিনেত্রীর মামার বাড়ি। নির্বাচনে হার-জিত যে পক্ষেই আসুক না কেন রাজনৈতিক রংয়ে তাদের সম্পর্ক ফিকে হবে না বলেই জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।