কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য! পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা রাজ্যের। রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মামলায় দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। বুধবার পঞ্চায়েতের দুই প্রার্থীর নির্বাচনী নথি বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে। খোদ বিডিও ও কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বৃহস্পতিবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিন্হা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করল রাজ্য।
উলুবেড়িয়া-১ নম্বর ব্লকের বিডিওর বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগে তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বিবি, অনুজা বিবি। তাঁদের দাবি ছিল, OBC হওয়ার পরেও মনোনয়নপত্রের চেকলিস্টে তা উল্লেখ করা হয়নি। আর এই কারণে স্ক্রুটিনিতে তাঁদের নাম বাদ পড়ে গিয়েছে। এরপরই মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ তোলেন প্রার্থীরা। বিডিওর কাছে সেই অভিযোগ জানাতেও যান। তবে বিডিও অভিযোগ নেননি বলেই দাবি। তারপরই জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। বিচার চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন বহিরা, ধূমিসামালি গ্রাম পঞ্চায়েতের এই দুই সিপিএম প্রার্থী। বুধবার অমৃতা সিনহার বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, “এই ঘটনায় সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে নথি বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে। তাই তদন্তের ভার রাজ্যের কোনও এজেন্সিকে দেওয়া উচিত হবে না।” এরপরই পঞ্চায়েত ভোটে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা। ৭ জুলাই সিবিআইকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়। সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বৃহস্পতিবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে মামলার দ্রুত শুনানির আর্জিও জানানো হয়। শুক্রবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক হিংসা, অশান্তির ঘটনার সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। জেলায় জেলায় আক্রান্ত হয়েছে বিরোধীরা। এমন আবহে বিরোধীদের মুখে বারবার শোনা গিয়েছে একটাই অভিযোগ, বিডিও অফিসগুলিকে পার্টি অফিস বানিয়ে ফেলেছে তৃণমূল। এমনকি বিডিও, এসডিওদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। বুধবার উলুবেড়িয়া মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর বিরোধী শিবিরের বক্তব্য ছিল, আদালত সঠিক জায়গাটা চিহ্নিত করেছে। কিন্তু, এর মধ্যেই ডিভিশন বেঞ্চে গেল রাজ্য। এখন প্রশ্ন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কি CBI তদন্তের নির্দেশ প্রসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চে আদৌ স্বস্তি পাবে রাজ্য? নাকি ফের ধাক্কা! সেটাই দেখার