ভোটের আগে ছাপা হচ্ছে নকল ব্যালট! বিস্ফোরক অভিযোগ অধীরের! পঞ্চায়েতে জেতার জন্য বেপরোয়া মনোভাব?

ভোটের আগে ছাপা হচ্ছে নকল ব্যালট! বিস্ফোরক অভিযোগ অধীরের! পঞ্চায়েতে জেতার জন্য বেপরোয়া মনোভাব?

কলকাতা:  পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই জেলায় জেলায় তীব্র অশান্তি শুরু হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই ১১ জনের প্রাণ চলে গিয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা বিরোধীদের ভয় দেখিয়ে, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে হাজার হাজার আসনে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি। শুধু তাই নয়, সরকারি আধিকারিক এবং পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এ কাজ করা হয়েছে বলে বিরোধীরা জোরের সঙ্গে দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, নির্বাচনের জন্য নকল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। ভোট লুঠ করার জন্য শাসকদল তৃণমূলের মদতে এ কাজ চলছে বলে দাবি করেছেন প্রদেশ সভাপতি। এ বিষয়ে অধীর বলেছেন, ”নকল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। সেই ব্যালট বুথ থেকে স্ট্রংরুমে যাওয়ার পথে পরিবর্তিত হবে। ব্যালট পেপার যারা ছাপে, যাদের কাছে কম্পিউটারের চাবি থাকে, সেই চাবি পুলিশ চাইছে। সেই চাবি দিতে অস্বীকার করাতে পুরুলিয়ার তিন অফিসারকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষের ভোটকে পরিবর্তন করে এভাবেই নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে চাইছে শাসক দল।”
 

স্বাভাবিকভাবেই অধীর যে অভিযোগ করেছেন তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, বাংলা জুড়ে কারচুপির খেলা চলছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করতে পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসন এক হয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেন অধীর। এ বিষয়ে তৃণমূল ও রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধে অধীর আরও বলেন, “মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্যও ব্যাপক সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্র হয়েছে। এতে পুলিশ প্রশাসন জড়িত। তাই হাজার হাজার প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ইতিমধ্যেই দশ জনের মৃত্যু হয়ে গিয়েছে। তারপরেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত নন। তাই তাঁকে নিজেকে মাঠে নেমে বলতে হচ্ছে আমাকে ভোট দিন। এরপর থেকে চুরি বন্ধ হয়ে যাবে।” 

 

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে নির্বাচনে জেতার জন্য তৃণমূল কি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে? পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের ভোটের ময়দান থেকে তৃণমূল হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ উঠেছে। সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে ভোটের আসরে নামিয়ে ফায়দা তোলার চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে। উল্লেখ্য এই অভিযোগ রাজ্যে নতুন কিছু নয়। বাম আমলেও তৎকালীন শাসক দলের বিরুদ্ধে এমন নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠত।

 

পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন সন্ত্রাস আগেও দেখেছে রাজ্যবাসী। কিন্তু কখনই নকল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে এমন অভিযোগ ওঠেনি। বিষয়টি যে অত্যন্ত গুরুতর তা বুঝতে পারছেন রাজনীতি সচেতন মানুষজন। তবে কি এই বিষয়টি নিয়েও এবার আদালতের দ্বারস্থ হবেন বিরোধীরা? সেই সম্ভাবনা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার তেইশের পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে যে সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা কখনই অতীতে দেখা যায়নি। বিষয়গুলি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য প্রশাসন কোনও তদন্ত করে কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =