মনোনয়নে বেনজির হিংসার পর এবার জাল ব্যালট পেপারের অভিযোগ! অনিয়ম করে জেতার চেষ্টা?

মনোনয়নে বেনজির হিংসার পর এবার জাল ব্যালট পেপারের অভিযোগ! অনিয়ম করে জেতার চেষ্টা?

bd997e18b1e1992aea5d80a97c50f55a

কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই জেলায় জেলায় অশান্তি আর হিংসা চরম আকার নিয়েছে। সেই হিংসা এখনও অব্যাহত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগের তির রয়েছে তৃণমূলের দিকে। যদিও শাসকদল সেই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা বলছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনেই বিরোধীরা নাটক করছে। এই চাপানউতোরের মধ্যেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

পঞ্চায়েত ভোটের দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করছেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ চারদিক জাল ব্যালটে ছেয়ে গিয়েছে। সোমবার জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে নির্বাচনী প্রচারে এসে এমনই দাবি করেছেন তিনি। ধূপগুড়িতে প্রচারে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “ইডি ভোটে বা ইলেকশন ডিউটি যে গোপনীয়তা থাকার কথা ছিল সেটা হচ্ছে না। একাধিক ব্যালট ছাপা হচ্ছে। ব্যালট পেপার  যেখানে ছাপতে গিয়েছে তাদের সঙ্গে শাসক দলের নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে। তৃণমূল মাঠে নেই। এগুলি করাচ্ছেন এসপি ও ডিএম’রা৷”

নির্বাচনী কাজে যুক্তদের মধ্যে যারা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তাঁরা সোমবারের পর মঙ্গলবারও ভোট দিতে পারবেন। যা ইডি বা ইলেকশন ডিউটি ভোট নামে পরিচিত। আর সেই ভোটকে নিয়েই গুরুতর অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর আরও অভিযোগ, “এই নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করতে মমতা বন্দোপাধ্যায় ও  তাঁর শাগরেদ  রাজ্য নির্বাচন কমিশন এক সঙ্গে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।” 

যথারীতি এই অভিযোগ অস্বীকার করছে তৃণমূল। কিন্তু প্রশ্ন হল এমন অভিযোগ উঠবে কেন? বাম জমানায় পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে নজিরবিহীন সন্ত্রাস দেখেছে রাজ্যবাসী। কিন্তু নির্বাচন ঘিরে এই ধরনের অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। যেভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তৃণমূলকে জড়িয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠছে, তা অতীতে দেখা যায়নি। কমিশন এ ব্যাপারে সাফাই দিতে গিয়ে যে দাবিই করুক না কেন, ওয়াকিবহাল মহল মনে করে তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। তাই প্রশ্ন, কমিশনকে কী হাতে  রেখে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত অনিয়ম করে ভোটে জিততে চাইছে তৃণমূল?

একাধিক জায়গায় অভিযোগ উঠেছে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় সরকারি কর্মীরা বিরোধীদের সঙ্গে সহযোগিতা করেননি। ইতিমধ্যেই এক বিডিও-র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে জনৈক বিরোধী প্রার্থী আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। যদি এই সমস্ত অভিযোগের কিছুটা হলেও সত্যতা থাকে, তাহলে প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল বারবার দাবি করে রাজ্য জুড়ে বিরোধীদের অস্তিত্ব নেই। তৃণমূল বলে থাকে সিপিএম-কংগ্রেস বাংলায় সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে। বিজেপিকে নিয়েও একই দাবি করে তারা। যদি সেই দাবি সত্যিই হবে তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে এত অশান্তি আর হিংসার ঘটনা কেন ঘটছে বাংলায়? এর সদুত্তর দেবেন কে? রাজ্য প্রশাসন কি এর দায় এড়াতে পারে? কেন জাল ব্যালট পেপারের অভিযোগ তোলার সাহস পাবে বিরোধীরা? এই চর্চা রাজ্য জুড়ে চলছে। নিঃসন্দেহে বিষয়গুলি অস্বস্তিতে ফেলছে তৃণমূলকে। এর অভিঘাত ভোটবাক্সে পড়ে কিনা এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *