কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়া থেকে রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাসের আবহ৷ মনোনয়ন পর্ব থেকে গ্রাম বাংলায় শুরু রক্তের হোলি খেলা৷ গণনাকে কেন্দ্র করেও রাজ্যে দফায় দফায় অশান্তি৷ গণনাকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মামলায় চাঞ্চল্যকর নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত জানাল, জয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করবে মামলার ভবিষ্যতের উপর। এই বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে উচ্চ আদালত।
বুধবার গণনা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিলেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কমিশন তার দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করেনি৷ আজও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে কেন্দ্রের নোডাল অফিসারের সঙ্গে যথাযথ যোগাযোগ করা হয়নি। এই বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালতের বক্তব্য, শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য৷ এই অভিযোগ গুরুতর। এই বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য আদালতে জানাতে হবে। এতদিন ধরে ভোট সংক্রান্ত যে সকল নির্দেশ আদালত দিয়েছে তা যথাযথ ভাবে পালন করা হয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে৷
মনোনয়ন পর্ব থেকে গণনা, পঞ্চায়েতকে কেন্দ্র করে সরগরম রাজ্য রাজনীতি৷ মঙ্গলবার রাতে গণনা পর্ব চলাকালীন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। বোমা-গুলির লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এর পাশাপাশি গণনা চলাকালীন একাধিক গণনা কেন্দ্রে বিরোধী প্রার্থী এবং এজেন্টদের বাধা দেওয়া হয়েছে৷ তাঁদের গণনা কেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী গুরু কৃষ্ণ কুমার এদিন আদালতে বুথ দখল ও বুথ লুঠের কিছু ভিডিওয়ো ফুটেজ পেশ করেন৷ তাঁর দাবি, ব্যালট পেপার টেম্পারিং হয়েছে, ভোট লুঠ হয়েছে। বহু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হয়নি বলেও আদালতকে জানান তিনি৷ গণনার দিনও রাজ্য অশান্তি অব্যাহত৷
শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতকে আরও জানান, ছবি ভিডিয়ো সহ ভোট লুঠের বিস্তারিত তথ্য কমিশনকে দেওয়ার পরেও পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। প্রায় ছ’হাজার বুথে অশান্তি হয়েছে। বিরোধী প্রার্থীরা মার খেয়েছে। সেখানে কমিশন কোনও নিরাপত্তা দিতে পারেনি৷ গুরু কৃষ্ণ কুমার আদালতকে বলেন, “কমিশনের কাছে যখন সংবাদ মাধ্যম জানতে চায় কেন গুলি চললো, তখন উনি বলেন “কে কোথায় গুলি মারবে সেটা কি আমার দায়িত্ব!”
এর পরেই ভোট এবং গণনার সময়কার বিভিন্ন জায়গার ভিডিয়ো ফুটেজ কমিশনকে সংরক্ষণ করার নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ জুলাই।