নিজস্ব প্রতিনিধি: সারদা-নারদা মামলায় কেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন বারবার তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বারবার প্রশ্ন তুলে বলেছেন, এফআইআরে নাম থাকা সত্ত্বেও বিজেপিতে রয়েছেন বলেই কি শুভেন্দুকে ডাকা হচ্ছে না? বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে গিয়ে এই প্রশ্ন বারবার তুলেছেন কুণাল। এবার বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা চাপ দেওয়ার রাস্তায় হাঁটলেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর দাবি সারদা মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্ত থাকার প্রমাণ তাঁর কাছে রয়েছে। এবার সিবিআইয়ের কাছে সেই প্রমাণ তুলে দিতে চান তিনি। শুভেন্দু বলেছেন, ”দু’তিন দিনের মধ্যে নিজাম প্যালেস কিংবা সিজিও কমপ্লেক্সে গিয়ে সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টরের কাছে সারদা দুর্নীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিয়ে আসব।” সারদা কাণ্ড নিয়ে ২০১৩ থেকেই যথেষ্ট আন্দোলিত হতে শুরু করে রাজ্য রাজনীতি। এই মামলায় তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা-নেত্রীর নাম জড়ায়। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের অভিযোগ তিনি শুভেন্দুকেও লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। এমনকী সুদীপ্তকে ব্ল্যাকমেল করে শুভেন্দু টাকা নিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের একুশে জুলাই ‘শহিদ দিবস’ সমাবেশের আগে শুভেন্দু যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জড়িয়ে সারদা কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুললেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে সারদা দুর্নীতি মামলায় বিচারাধীন অবস্থায় বন্দি রয়েছেন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। ২০১৪ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদা কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। এতদিন কেটে গেলেও এই মামলায় গতি আসেনি। তাই শুভেন্দু নতুন করে যেভাবে বিষয়টিকে উস্কে দিলেন তাতে যথেষ্ট জল্পনা তৈরি হয়েছে।
শুভেন্দু এমন মন্তব্য কেন করলেন তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে রাজনৈতিক মহল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির যতটা ভাল ফল হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। শুভেন্দুর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে থাকা দুটি লোকসভা আসন তমলুক এবং কাঁথিতে তৃণমূল এক লক্ষের বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপির থেকে। নন্দীগ্রামে বিজেপির ফল তুলনামূলকভাবে ভাল হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে বিজেপির ফল আরও ভাল হবে বলে আশা করেছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ দখল করার লড়াইয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি সমানভাবে টক্কর দেবে, এটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। আর তাতেই কি চাপে পড়ে গিয়ে শুভেন্দু এখন সারদা-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর নাম জড়িয়ে বিষয়টিকে উস্কে দিতে চাইছেন? এই চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। এই আবহের মধ্যে সারদা মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর নাম জড়িয়ে যে দাবি করেছেন শুভেন্দু, তার ভিত্তিতে তিনি কি প্রমাণ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন সেটাই দেখার।