‘মমতার থেকেও এগিয়ে আছে বৈশাখী…’, শোভন-বান্ধবীর কথায় শোরগোল

‘মমতার থেকেও এগিয়ে আছে বৈশাখী…’, শোভন-বান্ধবীর কথায় শোরগোল

কলকাতা: একসময় তিনি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্নেহের কানন। মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও সবচেয়ে ঘনিষ্ঠদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে সেই সম্পর্ক চিড় ধরে শোভনের সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের পর। স্ত্রী রত্নার সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং বৈশাখীর সঙ্গে শোভনের ঘনিষ্ঠতা নাকি ভালো চোখে নেননি মমতা। এর পর দু’জনের তিক্ততা এমন জায়গায় পৌঁছয় যে আবাসন ও দমকলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ২০১৮ সালে দল ছাড়েন শোভন। 

আজতক বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মমতা আর শোভনের সম্পর্ক নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রত্না নাকি তাঁকে মমতার কাছে যাবেন বলে ভয় দেখিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, গিয়ে সব জানাবেন। আর মমতা শোভনকে বলবেন, ‘কানন তুই বৈশাখীকে ছাড়।’ আর শোভনও সেই কথা শুনে বৈশাখীকে ছেড়ে দেবেন। তবে বৈশাখী শোভনকে গিয়ে বলেছিলেন, ‘তুমি আমাকে এমনিই ছেড়ে দিতে পারো। আমি মনোজিতকে আটকাইনি, তোমাকেও আটকাব না। কিন্তু কেউ আমাকে ছাড়তে বললো আর তুমি ছেড়ে দিলে, এমন অসম্মান করো না।’

বৈশাখী জানান, সেই সময় শোভন তাঁর হাত ধরে বলেছিলেন, ‘আমি যার হাতটা ধরি, ছাড়ার জন্য ধরি না’। এরপরেই তাঁরা ঠিক করেন, রত্না কিছু বলার আগেই তাঁরা যাবেন  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। বৈশাখী বলেন, ‘আমরা চাইনি তৃতীয় কোনও ব্যক্তি আমাদের সম্পর্কের কথা ওঁকে গিয়ে জানাক৷ শোভনও আমার ব্যাপারে দিদিকে জানাতে চাইছিল। সেই মতোই মমতাকে গিয়ে ও সবটা বলে।’’ সেটা ২০১৭ সালের গোড়ার কথা। তখন বৈশাখীর পরিচয় তৃণমূলের কর্মী হিসেবে। দিদি তাঁদের সম্পর্কের কথা শুনে কোনও মন্তব্য করেননি৷ বৈশাখী বলেন, ‘‘আমার কখনও মনে হয়নি যে দিদি রত্নার কথা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করবে। কারণ ও একঢোক জল খেলেও মমতা আর অভিষেককে গালাগালি করত।’’

বৈশাখীর কথায়, শোভন আর রত্নার ঝগড়ার অন্যতম কারণ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আনুগত্য। তিনি বলেন, ‘‘এমন হয়েছে আমরা শোভনের বাড়িতে কাজ করছি। শোভন এসে বলল, হঠাৎ করে দিদি যদি আমাকে ৯তলা বাড়ি থেকে ঝাঁপ দিতে বলে, আমি দিয়ে দেব। আর তখনই রত্না তেড়ে ফুঁড়ে উঠে বলে, ‘কেন আমার ছেলেমেয়েরা কি বাণের জলে ভেসে এসেছে? ওই পাগল মহিলার কথা শুনতে হবে।’’ আমরা তখন ওঁকে বলি, আরে রত্নাদি তুমি কি পাগল নাকি, মমতাদি কেনই বা এমন বলবেন? আর উনি কেনই বা ঝাঁপ দেবেন?’

বৈশাখী বলেন, ‘‘আমি আর শোভন সেই সময় ভাবতেই পারেননি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সহ্য করতে পারত না, সে গিয়ে দিদিকে ভুল বোঝাবে! কিন্তু ও সেই চালাকিটাই করল৷ ও গিয়ে বোঝাল, শোভনের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকেও যদি কেউ এগিয়ে থাকে, তাহলে সে হল বৈশাখী। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠরা একথা জানান।’’ বৈশাখী বলেন, ‘‘ও আমার নামে দুটো কথা বলেছে-এক বৈশাখী বিজেপির চর, দুই বৈশাখী শোভনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে আলাদা করে দিচ্ছে। এর ফলে ভুল বোঝাবুঝিটা অনেকটা বেড়ে যায়।’’ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =