অস্বাভাবিক জ্বর, সঙ্গে নাক দিয়ে রক্ত! অজানা রোগের আতঙ্কে কাঁপছে ইরাক

অস্বাভাবিক জ্বর, সঙ্গে নাক দিয়ে রক্ত! অজানা রোগের আতঙ্কে কাঁপছে ইরাক

ইরাক: করোনা এবং মাঙ্কি পক্সের আবহেই নতুন ভোগের আবির্ভাব ইরাকে। চলতি মাসেই বিশ্বজুড়ে করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে আরও এক সংক্রামক রোগ মাঙ্কি পক্সের প্রাদুর্ভাব। ইতিমধ্যেই এই দুই সংক্রমণকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। একদিকে যখন উত্তর কোরিয়া, চিন, ভারতের মতো একাধিক দেশে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে করোনার সংক্রমণ ঠিক তখনই এক দুই করে বাড়তে বাড়তে ইতিমধ্যেই ১৯ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কি পক্সের ভাইরাস।

বিশ্বজুড়ে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে করোনার পাশাপাশি এবার এই ভাইরাসকে নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ মহল। এমতাবস্তায় যখন নতুন মহামারীর আশঙ্কায় বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ঠিক তখনই এক ভয়াবহ অজানা রোগে কাঁপছে ইরাক। জানা যাচ্ছে চলতি বছরের প্রথম থেকেই ইরাকের বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ অজানা এক জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অজানা রোগের লক্ষণ হল প্রথমে প্রবল জ্বর এবং শেষে নাক দিয়ে রক্ত পড়া। ইতিমধ্যেই এই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ইরাকে ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আরও কয়েকজন। তবে সেই সংখ্যাটা ঠিক কত তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ইরাকের স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, চলতি বছরের শুরু থেকেই এই রোগের সূত্রপাত হলেও যত দিন যাচ্ছে তত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে এক্ষেত্রে সবথেকে উদ্বেগজনক বিষয়টি হল এই রোগের এখনো পর্যন্ত কোন ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিক জ্বরের ওষুধেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না। এমনকি এই রোগ সংক্রামক কিনা তাও স্পষ্ট নয়। ফলে ভ্যাকসিন নিয়েও চিন্তা ভাবনার কাজ এখনো শুরু হয়নি। এর জেরে রীতিমতো অথৈ জলে পড়েছেন দেশের চিকিৎসক মহল। কিভাবে এই অজানা জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা হবে সেটাই বুঝতে পারছেন না তারা। একইভাবে কিভাবে এই রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন সে ব্যাপারেও স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে মূলত দুটি কারণে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ওই দেশের মানুষ। একটি হল টিকের কামড় এবং অন্যটি হল টিকে আক্রান্ত কোনও পশুকে বলি দেওয়ার সময় তার শরীর থেকে যে রক্ত নির্গত হয়েছে সেই রক্তের সংস্পর্শে আসা।

 ইতিমধ্যে ইরাকের এই অজানা রোগের আক্রান্তের খবর শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তথা হু। তবে ইতিহাস বলছে ইরাকে এই অজানা জ্বরের প্রাদুর্ভাব নতুন কিছু নয়। এই একই উপসর্গের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাটি প্রথম ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে। এমনকি গত বছরেও বেশ কয়েকজন এই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে সে ক্ষেত্রে কারণ মৃত্যু ঘটেনি। কিন্তু চলতি বছরে এই অজানা জ্বরের প্রাদুর্ভাব ফের দেখা দিতেই রীতিমতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আর সেটাই এই মুহূর্তে সব থেকে বড় উদ্বেগের কারণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + thirteen =