কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাই কোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেলেই বদলে যাচ্ছে রায়। বিচারপতিদের এই সিদ্ধান্ত বদলের নেপথ্যে রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কারণ, এসএসসি হাই কোর্টে যে দাবি করছে, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সেই অবস্থান বদলে ফেলছে৷ সে কথা কানে এসেছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের৷ এর পরেই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি৷ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আদালতকে যাঁরা বোকা ভাবছেন, তাঁরা ‘কিং’ নন! সেই সঙ্গে তাঁর তির্যক মন্তব্য, ‘যাঁরা ভগবানকে চিনতে পারছেন না, তাঁদের বলব ঠাকুরঘরে যান। ভগবানকে চিনে যাবেন!’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দশে বুধবার স্কুল সার্ভিস কমিশন তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির ৯০৭ জন শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল, ওই ৯০৭ জন শিক্ষকের নাম এবং রোল নম্বর সহ উত্তরপত্র প্রকাশ করতে হবে এসএসসি-কে৷ ওই প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর এবং ওএমআর শিটের মধ্যে বিস্তার ফারাক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই রায় বহাল রাখে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷ এর পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা উঠলে উত্তরপত্র প্রকাশ করার ব্যাপারে হাই কোর্টের নির্দেশের উপর এক সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় উচ্চ আদালত। তবে তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তবে জনসমক্ষে না এনে শিট মুখবন্ধ খামে ওএমআর আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেই বুধবার ৯০৭ জনের তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি।
কিন্তু বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানির সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, কেন তাঁর নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হল? জবাবে মামলাকারীর আইনজীবীরা জানান, কমিশনের ক্রমাগত অবস্থান বদলের কারণেই এমন হয়েছে। কমিশন নাকি কলকাতা হাই কোর্টে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গরমিল নিয়ে যে কথা বলেছে, শীর্ষ আদালতে তা স্পষ্টভাবে স্বীকার করছে না। সেই কারণেই সুপ্রিম কোর্ট এমন নির্দেশ দিয়েছে৷
এরপরেই এজলাসে বসে সুপ্রিম কোর্টের রেকর্ডেড সওয়াল শোনেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সব শোনার পর স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন, হাই কোর্টের আইনজীবী এবং বিচারপতিরা বোকা নন। যাঁরা এমনটা ভাবছেন, তাঁরাও কেউ ‘কিং’ নন।