নিখোঁজ ছাত্রের ঘটনার মীমাংসা এক বছর পর, পুলিশি ব্যর্থতার অভিযোগ ছিল

নিখোঁজ ছাত্রের ঘটনার মীমাংসা এক বছর পর, পুলিশি ব্যর্থতার অভিযোগ ছিল

কলকাতা: স্নান করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ১ বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ওই ছাত্রকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তাই অবশেষে ছেলের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বাবা। প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন তিনি। বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, একজন হতভাগ্য পিতা তার পুত্রকে জীবিত বা মৃত খুঁজে বের করতে চাইছেন, এটা দুঃখজনক ব্যাপার।

ঠিক কী ঘটেছিল? ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের কৃতি ছাত্র নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় বন্ধুর সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়ার বলরাম ঘাটে স্নান করতে গিয়ে বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরের দিনও সে বাড়ি না ফেরায় ভাটপাড়া থানায় নিখোঁজ ছাত্রের বাবা নির্মল মুখোপাধ্যায় অভিযোগ দায়ের করেন। বন্ধুদের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। এরপর ছেলেকে খুঁজে পেতে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারের কাছেও অভিযোগ জানান। তবে তারপর কেটে গিয়েছে ১ বছর। এখনও ছেলের কোনও হদিশ পাননি তিনি। ফলে শেষে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। 

হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় জানতে চেয়েছিল যে, কেন এখনও পর্যন্ত ছাত্রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই বিষয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলবও করা হয়েছিল। সোমবার মামলা চলাকালীন রাজ্য সরকারের পক্ষে আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানানো হয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় অস্বাভাবিকভাবে নিখোঁজ হয়েছিল। আদালতে বেশ কিছু ছবি এবং ঘটনার সময় যারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাদের বয়ানও তুলে ধরা হয় ডিভিশন বেঞ্চে। 

জানানো হয়েছে, ঘাটে স্নান করার সময়ে জলের স্রোতে তলিয়ে গিয়েছে ওই ছাত্র। স্রোত অত্যন্ত বেশি হওয়ায় পুলিশ এবং বিপর্যয় টিম ছাত্রকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি। আর ছাত্রের বন্ধুরা ভয়ে কাউকে এই খবর জানায়নি। পরে জানা যায়, পুলিশের কাছে ছাত্রের বন্ধুরা জিজ্ঞাসাবাদের সময়ে আসল ঘটনা বলে এবং স্বর্ণব সরকার নামের এক বন্ধুর কাছ থেকেই মোবাইলে তোলা ছবিও উদ্ধার হয়। এই মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ঘটনা দুঃখজনক হলেও এটা নিছকই একটি দুর্ঘটনা। পুলিশ তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করেছে এবং চূড়ান্ত রিপোর্টও তারা দিয়েছে যে, ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে কেউ বলপূর্বক বা বেআইনিভাবে আটক করে রাখেনি। তাই কলকাতা হাইকোর্ট মামলা নিষ্পত্তি করে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + nineteen =