কলকাতা: যাদবপুরের র্যাগিং কাণ্ডে এসইউসিআই(সি)-এর তরফ থেকে আজ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলের রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য এই চিঠি দিয়েছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য। এই প্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিজেপি, সিপিএম প্রত্যেক দলই রাজ্য সরকারকে দায়ী করছে এই ইস্যুতে। তাই এই আবহে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে এই চিঠির তাৎপর্য বেশ।
এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের মৃত্যু গোটা দেশের মনকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে৷ দেশের এক প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা কেমন করে ঘটতে পারে তা বোধগম্য নয়৷ মূল বক্তব্য, বছরের পর বছর ধরেই এমন ঘটনা ঘটে আসছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহিত না থাকার কথা নয়। র্যাগিং বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট ইউজিসি-র সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে, যার মধ্যে অন্যতম হল এ্যান্টি র্যাগিং কমিটি ও এ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড গঠন। তাছাড়া প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা ছাত্রাবাসে রাখা এবং ভর্তির পর জুনিয়র ও সিনিয়র পড়ুয়াদের নিয়ে যুক্তভাবে র্যাগিং সম্পর্কে সংবেদনশীল করা ও তাদের মেলা-মেশার ব্যবস্থা করা৷ অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ না হলে এই ছাত্রের মৃত্যু হত না৷
এসইউসিআই-এর এও বক্তব্য, এই ঘটনাকে অপরাধমূলক অবহেলা ছাড়া কিছু বলা যেতে পারে না, রাজ্য সরকারও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না৷ কেন, তার ব্যাখ্যাও এই চিঠিতে করেছে তারা। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র কোনও স্থায়ী উপাচার্য না থাকার ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে এ যুক্তি গ্রাহ্য নয়, কারণ গত মে মাস পর্যন্ত তা ছিলই৷ আবার স্থায়ী উপাচার্য না থাকার ফলে যদি কোনও অসুবিধা হয়ে থাকে তার জন্য রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকার দায়ী৷ কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে কে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করবে সেই দড়ি টানাটানির ফলে এমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলি স্থায়ী উপাচার্যহীন।
এই পরিস্থিতিতে তাঁদের দাবি, দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সুপ্রিম কোর্ট ও ইউজিসির র্যাগিং প্রতিরোধে সুপারিশকৃত সকল ব্যবস্থাপনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে কার্যকর করতে হবে। এছাড়া রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং সহ অন্য সমস্ত কলেজে র্যাগিংয়ের মত অসামাজিক ও অপরাধমুলক কাজ বন্ধের জন্য রাজ্যের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, শিল্পীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে প্রচারমূলক কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে৷