কলকাতা: ১১ বছরের মেয়ে ছ’মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা৷ কিন্তু, এতদিন জানতেই পারেননি বাবা-মা! বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা৷ ময়ের শরীরে বেড়ে ওঠা ২৪ সপ্তাহের ভ্রূণ গর্ভপাত করাতে চেয়ে আর্জি জানান আদালতে৷
ওই নাবালিকা পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া৷ কিছু দিন আগে গণধর্ষণের শিকার হয় সে৷ তার জেরে ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লেও, এতদিন তা বুঝতে পারেনি তার পরিবার৷ গত মাসে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন। নাবালিকার মানসিক এবং শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় নাবালিকার পরিবার। কিন্তু, হাসপাতালের তরফে তাদের জানানো হয়, উচ্চ বা শীর্ষ আদালতের অনুমতি ছাড়া গর্ভপাত করা সম্ভব নয়। এর পরই আদালতের দ্বারস্থ হয় তার পরিবার৷
ওই নাবালিকার গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের নির্দেশ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চারটি বিভাগের দক্ষ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত বোর্ড নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করবেন। মেডিক্যাল বোর্ডে অবশ্যই রাখতে হবে শিশুরোগ এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে।
বিচারপতি ভট্টাচার্য জানান, সোমবার আদালত খুললেই সবার আগে এই মামলাটি শোনা হবে। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্ট দেখার পরেই পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত। ওই নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের চিফ মেডিক্যাল অফিসার এবং তাম্রলিপ্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত৷
আমাদের দেশের আইন বলছে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কোনও মহিলা, নাবালিকা বা নাবালিকার পরিবার ২০ সপ্তাহ সময় পর্যন্ত গর্ভপাত করানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশেষ পরিস্থিতিতে তা ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় দেওয়া হতে পারে। তার পরে গর্ভপাত করাতে হলেই আদালতের অনুমতি প্রয়োজন। বুধবার এই মামলার শুনানিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। নাবালিকার বয়স নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।