কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়৷ বিস্ফোরক দাবি হস্টেলের সুপারের৷ গত বুধবার রাতে যাদবপুরের মেন হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় বংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার। এই ঘটনার পিছনে উঠেছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ। কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও। তাঁদের অজান্তে নিয়ম ভেঙে কীভাবে দিনের পর দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা হস্টেলে পড়ে থাকতেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ এবার এই বিষয়েই বোমা ফাটালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল সুপার দ্বৈপায়ন দত্ত।
হস্টেলে নতুন ছেলেরা এলেই যে সিনিয়রদের কাছে তাঁদের ‘ইন্ট্রো’ দিতে হত, সে কথা জানতেন সুপার। কিন্তু ইন্ট্রোর নামে যে ছাত্রমৃত্যুর মতো চরম একটা ঘটনা ঘটে যেতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা ছিল না তাঁর। দ্বৈপায়নের দাবি, হস্টেলে যে জুনিয়রদের র্যাগিং করা হত, নেশার আসর বসত— সবটাই জানা ছিল কর্তৃপক্ষের। তবে রাতে কোনও গোলমাল হলে কখনই কর্তৃপক্ষকে পাশে পাওয়া যায়নি, জানান সুপার। তাঁর কথায়, ‘‘কর্তৃপক্ষ সবই জানেন। কর্তৃপক্ষ জানেন না এ রকম কিছু নেই। যাদবপুরে এমনটা আজ প্রথম হচ্ছে না। বরাবরই যাদবপুরে এটা হয়ে এসেছে। কর্তৃপক্ষ সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নিতেন না। আমরা কখনও কখনও মৌখিক ভাবে বলেছি, ‘স্যর, এ রকম হচ্ছে। তবে কোনও ছেলে যদি কর্তৃপক্ষর কাছে রিপোর্ট করতেন, তা হলে সব সময় ব্যবস্থা নেওয়া হত, এটা আমি দেখেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনও দিন রাতে আসেননি বা কর্তৃপক্ষকে আমরা কোনও দিন রাতে পাশে পাইনি।’’ ’
তাঁর অভিযোগ, “হস্টেলে সিনিয়রদের মারাত্মক প্রভাব ছিল। বিশেষত, মেন হস্টেলে বসত নেশার আসর। নজরদারি করতে গেলেই বাধা দেওয়া হত। অকথ্য গালিগালাজ করা হত। কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে অবগত ছিল।” ব়্যাগিং ইস্যুতে সুপারের সাফবক্তব্য, “হস্টেলের ঘরে, ছাদে র্যাগিং চলত৷ প্রাক্তনীদের ব্যাপক প্রভাব ছিল।” সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমরা ২ জন সুপার ৬০০ ছাত্রকে সামল্যাব কী করে?’ অর্থাৎ হস্টেলে আবাসিকদের নজরদারির ক্ষেত্রে যে যথেষ্ট প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল না, তা সুপারের বক্তব্যে স্পষ্ট৷
তিনি আরও বলেন, ওই দিন রাতের ঘটনায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগও তুলেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। এই প্রসঙ্গে হস্টেল সুপার বলেন, “৯ অগস্ট, রাত তখন ১২টা ৭৷ আমাদের আর এক হস্টেল সুপার গৌতম মুখোপাধ্যায় আমাকে ফোন করে জানান যে আমাদের কোনও একটা ব্লকের বারান্দা থেকে এক ছাত্র পড়ে গিয়েছেন। এ কথা শোনার পর আমি নীচে নামার আগেই ওই পড়ুয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”