পেট্রোল পাম্পে রাতভর চা-রুটি বিলি করলেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার

পেট্রোল পাম্পে রাতভর চা-রুটি বিলি করলেন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার

কলম্বো: চরম অর্থনৈতিক সংকটে কার্যত ধুঁকছে শ্রীলঙ্কা। জ্বালানি থেকে খাবার, সমস্তকিছুই এই মুহূর্তে বাড়ন্ত সে দেশে। সামান্য একটু জ্বালানির আশাতেও রাতভর পেট্রোল পাম্পের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অন্যদিকে সামান্য খাবার থেকে ওষুধ এই সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস জোগাড় করতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন দেশের সাধারণ মানুষ। এমতাবস্তায় এই চরম অর্থনৈতিক সংকটের সময় দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার রোশন মহানামা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে রাতভর জ্বালানির আশায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পেট্রোলপাম্পের ক্রেতাদের বিনামূল্যে রুটি এবং চা সার্ভ করছেন তিনি। প্রায় দেউলিয়া দেশের মানুষের কাছে যখন আর কোন সম্বলই বাকি নেই, তখন এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের অন্যান্য বিশিষ্টজনের মতো সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই জনপ্রিয় ক্রিকেটারও।

সম্প্রতি নিজের টুইটারে শ্রীলংকার একটি পেট্রোল পাম্পে খাবার মিলের ভিডিও পোস্ট করেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার রোশন মহানামা। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘দীর্ঘক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে গ্রাহকেরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। অনেকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাদের কথা ভেবে এই উদ্যোগ। চা-রুটির পাশাপাশি যারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, সেখানেই তাদের সুস্থ করে তোলা হচ্ছে। এর জন্য কারও থেকে এক নয়াপয়সা নেওয়া হচ্ছে না।’ এরপরেই রাতারাতি কার্যত ভাইরাল ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কান এই ক্রিকেটার। দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর কার্যত তাকে ধন্য ধন্য করছেন নেটপাড়ার লোকজন। তার এই মানবিক রুপ দেখে কার্যত আপ্লুত নেটিজেনরা। তবে তিনি একা নন, শ্রীলংকার বহু বিশিষ্ট মানুষই এই মুহূর্তে দেশের সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এবং তাদের সাহায্যে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে খবর।

অন্যদিকে জানা যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায় জ্বালানির অভাব ফের চরম সীমায় পৌছেছে। দেশের আর কোন প্রান্তেই কোনও জ্বালানি অবশিষ্ট নেই বলে খবর। এমতাবস্থায় পেট্রল পাম্পের সামনে সামান্য একটু জ্বালানির খোঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন দেশের নাগরিকরা। এই ভিড়ের কারণে যাতে পেট্রলপাম্পগুলোতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য কঠোর পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পেট্রলপাম্প চত্বরে।  রবিবারও কোনও কোনও পেট্রোল পাম্পে বিক্ষুব্ধ জনতার ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে পুলিশকে। যদিও ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ভারত, বাংলাদেশের মতো একাধিক প্রতিবেশী দেশ। ভারত ইতিমধ্যেই সেই দেশের সাধারণ মানুষের জন্য খাবার থেকে জ্বালানি তেল সমস্ত কিছুই সরবরাহ করেছে। কিন্তু তারপরেও এই ভয়াবহ পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা কারো জানা নেই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 3 =