প্যানেলে শুধুই নাম, অপ্রকাশিত নম্বর, কলেজে অধ্যাপক নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ, হলফনামা চাইল কোর্ট

প্যানেলে শুধুই নাম, অপ্রকাশিত নম্বর, কলেজে অধ্যাপক নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ, হলফনামা চাইল কোর্ট

Court Demands

কলকাতা: স্কুলের পর কলেজেও নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ৷ কলেজে অধ্যাপক নিয়োগে গরমিল হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে চাকরিপ্রার্থী মোনালিসা ঘোষ৷ সেই মামলার ভিত্তিতেই সহকারী অধ্যাপক নিয়োগের প্যানেলে প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশের বিষয়ে কলেজ সার্ভিস কমিশনের (সিএসসি) কাছে হলফনামা তলব করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। (Court Demands)

Court Demands

এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিয়োগে স্বচ্ছতার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করাটা অত্যন্ত জরুরি। তবে এ বিষয়ে কমিশন কী বলছে, সেটাও শোনা দরকার। তার পরেই কোর্ট এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারে। এর পরেই মোনালিসা ঘোষের মামলায় হলফনামা তলব করেন বিচারপতি। ১৩ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে৷

এ দিন মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, বিভিন্ন বিষয়ে সিএসসি-র মাধ্যমে নিয়োগের প্যানেল প্রকাশিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তালিকা৷ নিয়োগ প্যানেলে নামের তালিকা দেওয়া হলেও, সেখানে প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের উল্লেখ নেই। ফলে সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সিএস্সি-র আইনজীবী  অবশ্য এ বিষয়ে বলেন, শিক্ষাগত ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর, গবেষণাপত্র, ইন্টারভিউ পারফরম্যান্স ইত্যাদি খতিয়ে দেখেই নিয়োগের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

সিএসসি-র বক্তব্য শোনার পরেই বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘সিএসসি-র চেয়ারম্যানের কতগুলি গবেষণাপত্র আছে?’’ তিনি আরও বলেন যে, ‘‘মনে রাখবেন, এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য কিন্তু বর্তমানে জেলে আছেন।’’ প্রসঙ্গত, সুবীরেশ এসএসসি-র চেয়ারম্যানের পদ থেকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন৷ তিনি ওই পদে থাকাকালীনই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই৷ 

২০২০ সালের শেষে সিএসসি-র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ২০২২ সালে ইন্টারভিউ শুরু হয়৷ সম্প্রতি একাধিক বিষয়ে প্যানেল প্রকাশিত হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেরই অভিযোগ, পিএইচ ডি ও একাধিক গবেষণাপত্র থাকা অনেকেরই নাম নেই প্যানেলে৷  অথচ এমন অনেকেরই নাম সেখানে রয়েছে, যাঁদের যোগ্যতা ও ইন্টারভিউয়ে মোট প্রাপ্ত নম্বর নিয়ে সন্দেহ আছে। কলেজ সার্ভিস কমিশন নম্বর প্রকাশ না করায় সেই সন্দেহ বেড়েছে৷ 

চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বক্তব্য, মাধ্যমিক থেকে পিএইচ ডি, প্রতি স্তরের জন্য নম্বর বরাদ্দ আছে। প্রতিটি গবেষণাপত্রের জন্যেও নির্দিষ্ট নম্বর রয়েছে৷ কোনও প্রার্থী সর্বাধিক কত নম্বর পেতে পারেন তা-ও নির্দিষ্ট রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, সিএসসি নম্বর নিয়ে রাখঢাক করেছে। ইন্টারভিউয়ের সময় প্রার্থীদের ‘ডেমো ক্লাস’ নিতে হয়। ‘ডেমো’র জন্য কত এবং অন্য বিষয়ে কত নম্বর, সেই বিভাজন নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে। কলেজের ইন্টারভিউয়ের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়েছে কি না, সেটাও স্পষ্ট নয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 2 =