কলকাতা: কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে দিল্লিতে আওয়াজ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ কিন্তু রাজধানীর বুকে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি-কাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার রাতে তিনি এক্স হ্যান্ডলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন। সেখানেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি।
মঙ্গলবার যন্তর মন্তরের কর্মসূচি শেষে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের৷ সেই মতো সন্ধ্যাহেলায় তাঁরা সেখানে পৌঁছে যান৷ সঙ্গে ছিলেন আট ভুক্তভোগী৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা না করায় কৃষিভবনেই অবস্থানে বসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতারা। কিন্তু, সেখান থেকে তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে দিল্লি পুলিশ৷ শুরু হয় ধ্বস্তাধস্তি৷ পরে তাঁদের আটক করা হয়৷ টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তর দিল্লির মুখার্জীনগর থানায়। সেখানে ঘণ্টা দুয়েক আটকে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করেছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷
মমতা লিখেছেন, “আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি অন্ধকার ও অশুভ দিন। বাংলার জনগণের প্রতি বিজেপির ঘৃণা, দরিদ্রদের অধিকারের প্রতি তাদের অবজ্ঞা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও লেখেন, “প্রথমত, তারা বাংলার গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ গুরুত্বপূর্ণ তহবিল আটকে রেখেছে। আমাদের প্রতিনিধি দল যখন দিল্লিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ করছে, তাঁরা যখন জনগণের দুর্দশার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, তখন তাদের সঙ্গে নির্মম আচরণ করা হয়েছে। প্রথমে রাজঘাটে এবং পরে কৃষিভবনে। বিজেপির শক্ত হাত হয়ে কাজ করেছে দিল্লি পুলিশ৷ নির্লজ্জ ভাবে আমাদের প্রতিনিধিদের হেনস্থা করা হয়েছ। তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ অপরাধীদের মতো টেনে হিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ, ওঁরা ক্ষমতার সামনে সত্য কথা বলার সাহস দেখিয়েছে। ওঁদের ঔদ্ধত্যের কোন সীমা নেই। অহংকারে অন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাংলার কণ্ঠস্বরকে দমন করতে তারা সব সীমা অতিক্রম করেছে!” ইংরেজিতে লেখা ওই পোস্টে শেষে তিনি বাংলায় লেখেন, “কিন্তু আমরা ভয় করব না ভয় করব না, দু’বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না।”