ব্রিটেন: দলীয় বিদ্রোহে আরও কোনঠাসা ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বিগত দুদিন ধরে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনায় ব্রিটিশ রাজনীতির তোলপাড় অবস্থা। মঙ্গলবার ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সচিব যে পথ দেখিয়েছিল এক এক করে মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরাও সেই পথেই হাঁটছেন। ফলে জানা যাচ্ছে গত ২৪ ঘন্টায় ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা থেকে কমপক্ষে ৪০ জন মন্ত্রী নিজেদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিদ্রোহের জেরে সরকার বাঁচাতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা জনসনের। এমতাবস্থায় অনেকেই মনে করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর গদি হারানো এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এমন চলতে থাকলে পুনর্নির্বাচন ছাড়া আর কোন রাস্তায় খোলা থাকবে না। আর পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে মনে করা হচ্ছে নির্বাচনের পথেই হাঁটছে ব্রিটেন।
উল্লেখ্য চলতি বছরের প্রথম থেকেই একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। এদিকে পরিস্থিতি যাই হয়ে যাক কিছুতেই প্রধানমন্ত্রীত্ব ছাড়তে রাজি নন তিনি। বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ২০১৯ সালের নির্বাচনে জনগণ তাকে বিপুল ভোটে জিতিয়েছে এবং তাদের সেই আস্থার মর্যাদা রাখতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে যেতে চান। কিন্তু পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে বরিস সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ সম্প্রতি দলের অন্দরেই বেনজির বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। সেই পরিস্থিতি আরো জটিল হয় যখন মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় সরাসরি প্রশ্ন তুলে ইস্তফা দেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সচিব এবং অর্থ দপ্তরের প্রধান। একই রাস্তায় হেঁটে বুধবার সকালে নিজেদের ইস্তফাপত্র জমা দেন পরিবহন মন্ত্রী এবং পরিবার ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী। তাঁদের দেখাদেখি বুধবার রাতের মধ্যে থেকে মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার হিড়িক বেড়ে যায় এবং পদত্যাগী মন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে হয় ৪০। বিশ্লেষকদের দাবি এমন অবস্থা চললে সরকার চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে বরিস জনসনের পক্ষে ও তখন নির্বাচন ছাড়া আর কোনও উপায়ই পড়ে থাকবে না।
জানা যাচ্ছে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় বহু মন্ত্রী দাবি করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী বরিষ জনসন আসলে অসত্য। অন্যদিকে একই দাবি তুলে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সওয়ার হয়েছেন অর্থমন্ত্রীও স্বাস্থ্য সচিব। তাঁরা নিজেদের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরই টুইটারে লেখেন, একাধিক দুর্নীতির পর জনসন জনগণের আস্থা হারিয়েছেন। ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রী সঠিক নীতির সঙ্গে চলতে পারেন না ফলে বহু সংসদ এবং জনগণ জনশন সরকারের প্রতি আর আস্থা রাখতে পারছেন না।