ed
কলকাতা: রেশন দুর্নীতির তদন্তে উঠে আসতে শুরু করেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইডি-র আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন, রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার বাকিবুর রহমান শুধু চালকল-আটাকল কিংবা হোটেলের ব্যবসায়ীই ছিলেন না, টলিউডে ছবি তৈরিতেও টাকা ঢেলেছিলেন তিনি। রেশন দুর্নীতি’র টাকা সাদা করতে বিনিয়োগ করা হয়েছিল সিনেমা তৈরির কাজে। যদিও এই বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু করেছেন ইডি-র আধিকারিকরা।
দুর্নীতির তদন্তে বারবার মিলিছে টলিউডের সঙ্গে যোগ৷ শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়৷ যাঁর ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে টাকার পাহাড় উদ্ধার করেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ এর পরে বনি সেনগুপ্ত, নুসরত জাহানের মতো অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও পা রাখতে হয়েছে সিজিও কমপ্লেক্সে৷ তবে এবার পার্থর সঙ্গে যোগসূত্রে নয়, অর্পিতার নাম জড়াল বাকিবুরের সঙ্গে! যদিও সেই সম্পর্কের নেপথ্যে পার্থ কিনা, তা এখনও ইডি-র কাছে স্পষ্ট নয়৷
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে একটি বাংলা সিনেমা প্রযোজনা করেছিলেন বালু ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। ওই সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন পার্থের ‘কাছের মানুষ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ইডি সূত্রের খবর, ওই সিনেমার পোস্টারে প্রযোজক হিসাবে উল্লেখ রয়েছে বাকিবুরের নাম৷ এখন অনেকেরই প্রশ্ন, জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী তথা প্রযোজন বাকিবুরের থেকে কত পারিশ্রমিক হেঁকেছিলেন অর্পিতা?
ইডি সূত্রের খবর, সিনেমাটিতে যাঁরা অভিনয় করেছিলেন তাঁরা প্রায় সকলেই টলিউডের পরিচিত মুখ৷ সেখানে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন নাইজেল আকারা। এই ছবির একটি ছোট দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন বলিউডের এক অভিনেত্রীকেও। ছবির নাম ম্যানগ্রোভ৷
টলিউড ইন্ডাস্ট্রির বেশ পরিচিত মুখ নাইজেল। বিভিন্ন সিনেমায় তাঁর অভিনয়শৈলী দর্শকমহলে প্রশংসিত হয়েছে। ম্যানগ্রোভের কী বক্তব্য তাঁর? কীভাবে দেখছেন গোটা বিষয়টি? নাইজেল সংবাদমাধ্যমকে অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, তিনি বিভিন্ন সিনেমায় কাজ করেছেন। অনেকক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, সিনেমার প্রযোজকদের তাঁরা চেনেন না। নাইজেলের কথায়, “কে কালো টাকা সাদা করার জন্য ছবি করছে, কে অন্যান্য বড় প্রযোজনা সংস্থা যেমন ছবি করে, সেরকম ভাবে ই কাজ করছে… সেটা আমাদের পক্ষো জানা সম্ভব নয়৷ আমরা কাজ করি, পারিশ্রমিক পাই। এর বেশি আর কিছু নয়।”
যদিও রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে ইডি ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে, কালো টাকা সাদা করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা বিনিয়োগ করা হয়েছিল। এর জন্য বেশ কিছু ভুয়ো সংস্থাও খোলা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়ের দুটি বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী-কন্যাকে তিনটি সংস্থা নিয়ে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই তিনটি সংস্থার মাধ্যমেই ‘কালো টাকা’ সাদা করা হয়েছে। যদিও মন্ত্রী সহ তাঁর গোটা পরিবারই ওই সব ভুয়ো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ খারিজ করে দেন৷