নয়াদিল্লি: আগেই নেওয়া হয়েছিল সিদ্ধান্ত৷ সেই সিদ্ধান্তের নিরিখে দেশে এই প্রথমবার সংযুক্তিকরণ হতে চলেছে তিনটি সম্পূর্ণ আলাদা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের। বুধবার ‘ব্যাঙ্ক অফ বরোদা’র (BOB) সঙ্গে বিজয়া ব্যাঙ্ক ও দেনা ব্যাঙ্কের সংযুক্তির প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রিয় মন্ত্রিসভা।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাঙ্কিং সংকট হওয়া সত্ত্বেও পরিষেবায় স্বচ্ছলতা আনতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার বলে সূত্রের খবর। সঙ্গে বিশ্ববাজারে ‘ব্যাঙ্ক অফ বরোদা’কে আরও প্রতিযোগীতামূলক করে তুলতেই এই সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে। সংযুক্তিকরণের পর বিজয়া ব্যাঙ্ক এবং দেনা ব্যাঙ্কের শেয়ারহোল্ডাররা ‘ব্যাঙ্ক অফ বারদা’র কটা শেয়ার পাবেন, সে বিষয়েও এদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিওবি-এর পরিচালন পর্ষদ।
এদিন মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে তিন ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ। যার ফলে ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ (SBI) এবং ‘আইসিআইসিআই’র (ICICI) পর দেশের তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাঙ্ক হিসাবে উঠে আসবে ‘ব্যাঙ্ক অফ বারোদা’র নাম। একইসঙ্গে, দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ১৮। এই সংযুক্তিকরণের পর বিজয়া ব্যাংক ও দেনা ব্যাংক ‘ট্রান্সফারর’ ব্যাংক হিসাবে এবং ব্যাংক অফ বরোদা ‘ট্রান্সফারি’ ব্যাংক হিসাবে কাজ করবে।
তবে সংযুক্তিকরণের ফলে দুই ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের ওপর তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। তিনি জানান, “তিনটি ব্যাঙ্কের সংযুক্তির পরে কোনও কর্মী ছাঁটাই হবে না। চাকরির সমস্ত শর্তও থাকবে অপরিবর্তিত।” সঙ্গে তিনি আরও জানান, “বিশ্ববাজারে বিওবি-কে প্রতিযোগিমূলক ঋণদাতা হিসাবে তুলে ধরতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।”
যদিও সরকারের সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নয় ব্যাঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়নগুলি। ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্সের (UFBU) রাজ্য আহ্বায়ক সিদ্ধার্থ খান জানান, “আমরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন কর্মসূচী ঠিক করার জন্য চলতি সপ্তাহেই বৈঠকে বসছি।” একই কথা শোনা গিয়েছে ব্যাঙ্ক শিল্পের সাধারণ কর্মীদের
বৃহত্তম ইউনিয়ন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (AIBEA)-এর সভাপতি রাজেন নাগরের মুখেও।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ও ২৬ দিসেম্বর এই সংযুক্তিকরণের বিরোধীতায় আন্দোলনে নেমেছিল ইউএফবিইউ।
যার ফলে বছরের শেষ সপ্তাহে অনেকটাই দুর্ভোগে পড়তে হয় দেশবাদসীকে। তবে সেই আন্দোলন যে খুব একটা কার্যকরী হয়নি তা এদিনের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে প্রমানিত।